অবশেষে স্বাধীনতার পথে চূড়ান্ত যাত্রা

অসহযোগ আন্দোলনে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মিছিল। ১ মার্চ ১৯৭১। ছবি: সংগৃহীত

(১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রহর প্রহরে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র আত্মপ্রকাশ করলেও বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য নানা তৎপরতার শুরু হয়েছিল আরও কয়েক দশক আগে। দ্য ডেইলি স্টারের তিন পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের তৃতীয় ও শেষ পর্বে থাকছে গণঅভ্যুত্থান ও অসহযোগ আন্দোলন থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার পটভূমি।)

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আইয়ুব খানের পতন হওয়ার পরে সে বছরের ২৫ মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হন ইয়াহিয়া খান। এর পরপরই সমগ্র পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি করেন তিনি। একইসঙ্গে সংবিধান বাতিল করে জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।

ক্ষমতা গ্রহণের কয়েকদিনের মধ্যেই ইয়াহিয়া খান নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরই তার মূল লক্ষ্য বলে ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে তিনি শাসনতন্ত্রের মূলনীতি ও শাসনতন্ত্রের মূল চাবিকাঠি নিজের হাতে রেখে আইনগত কাঠামো ঘোষণা করেন।

ইয়াহিয়া খানের ঘোষিত আইনগত কাঠামো গণতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মন্তব্য করে এর কিছু ধারা বিলোপের দাবি জানিয়ে ৬ দফা ও ১১ দফার ভিত্তিতে সংগ্রাম অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ।

আগস্টের শুরুতে পাকিস্তানের নতুন মন্ত্রীসভা গঠিত হওয়ার পরে আগস্টের শেষের দিকে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে ইয়াহিয়া খান বলেন, ১৯৭০ সালের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলনকে স্মরণ করে ১৯৬৯ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনদিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ।

আবু সাঈদ খানের লেখা 'স্লোগানে স্লোগানে রাজনীতি' গ্রন্থ সূত্রে জানা যায়, ১৫ সেপ্টেম্বর কর্মসূচির প্রথম দিনে মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রসভা চলাকালীন আকস্মিকভাবে প্রথমবারের মতো 'জয় বাংলা' স্লোগান উচ্চারণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেতা আফতাব উদ্দিন আহমেদ ও দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক শাহ হেলালুর রহমান। সঙ্গে সঙ্গে আরও কয়েকজন জয় বাংলা স্লোগান দেন।

ডা. মাহফুজুর রহমানের 'বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ' গ্রন্থ সূত্রে জানা যায়, ১৯৭০ সালের ৭ জুন রেসকোর্স ময়দানে জনসভার আয়োজন করে ছাত্রলীগ। সমাবেশের আগে ছাত্রলীগের সদ্য প্রতিষ্ঠিত জয় বাংলা স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ৬ দফার পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে ঢাকা শহর প্রদক্ষিণ করে। ছাত্রলীগ আয়োজিত সেই সমাবেশে কুচকাওয়াজের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে সামরিক কায়দায় সালাম জানায় জয় বাংলা বাহিনী। কুচকাওয়াজ শেষে বঙ্গবন্ধুর হাতে মানচিত্র খচিত লাল-সবুজ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তুলে দেন ডাকসুর ভিপি আ স ম আবদুর রব। পতাকাটির নকশা করেছিলেন কুমিল্লা ছাত্রলীগ কর্মী শিবনারায়ণ দাস। জনসভায় দেওয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে ৬ দফাকে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান।

১৯৭০ সালের ভোলার ঘূর্ণিঝড়। ছবি: সংগৃহীত

১৯৭০ সালের প্রলয়ঙ্কারি ঘূর্ণিঝড়

১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর পূর্ব পাকিস্তানের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে প্রলয়ঙ্কারি ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড় ও ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে হাতিয়া, সন্দ্বীপ, ভোলাসহ দেশের উপকূলীয় জনপদে মারা যান ৩-৫  লাখ মানুষ। জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যায় অগণিত গবাদিপশু, বিপুল পরিমাণ ফসলাদি নষ্ট হয়।

ঘূর্ণিঝড় পরবর্তীতে আক্রান্ত এলাকাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে জরুরি অবস্থা জারি আহ্বান জানিয়ে ওইসব জায়গায় সফর করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একইসঙ্গে তিনি দুর্গত এলাকায় ত্রাণ সরবরাহে সরকারের গড়িমসির তীব্র সমালোচনা করেন। অন্যদিকে অসুস্থ অবস্থাতেও জলোচ্ছ্বাসে দুর্গত হাতিয়া সফর করেন মওলানা ভাসানী।

'বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ' গ্রন্থে বলা হয়েছে, ১৮ নভেম্বর দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবিতে অনুষ্ঠিত এক মিছিলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এর পাঁচদিন পরে ২৩ নভেম্বর পল্টনের জনসভায় মওলানা ভাসানী বলেন, 'এ দুর্দিনে পশ্চিমের কোনো নেতাই পূর্ববাংলার লোকদের দেখতে আসেনি।' এর একদিন পরেই ঘূর্ণিঝড়ের কারণ দেখিয়ে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন মওলানা ভাসানী।

মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, 'ভাসানীর নির্বাচন বর্জন করার কারণ অন্য ছিল। ভাসানী তখন বিশ্বাস করেছিলেন নির্বাচনে আসলে কিছুই হবে না, কারণ ৫৬'র  নির্বাচনে তো কিছুই হয়নি। ভাসানী মূলত এ জন্যই নির্বাচনে অংশ নেননি।'

ঘূর্ণিঝড় সত্তরের নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছিল মন্তব্য করে ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, 'সত্তরের ঘূর্ণিঝড় পরবর্তীতে সরকারি উদ্যোগ মানুষকে বিক্ষুব্ধ করেছিল। ঘূর্ণিঝড়ের আগে যেসব মানুষ আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করেছিল, তাদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের পক্ষে চলে এলো।'

১৯৭০ সালের নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন শেখ মুজিবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

সত্তরের নির্বাচন

ঘূর্ণিঝড়ের এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় বহুল প্রতীক্ষিত পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন। সমগ্র পাকিস্তানের জনগণই নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়। নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের ১৬২টি আসনের মধ্যে ১৬০টি আসনেই জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। ৩১৩ আসন বিশিষ্ট জাতীয় পরিষদে সাতটি নারী আসনসহ আওয়ামী লীগ ১৬৭টি আসন পেয়ে সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।

সত্তরের নির্বাচনে বিজয়ী হয়েই ৬ দফার প্রশ্নে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে প্রদেশ সফরে বেরিয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধু। ৯ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু বলেন, 'লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে।'

নির্বাচনে জয়লাভের পর আসন্ন ৩ জানুয়ারি বিজয় দিবস পালনের অংশ হিসেবে রেসকোর্স ময়দানে জনসভা আহ্বান করে আওয়ামী লীগ। জনসভায় আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত ৪১৭ জন জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যকে ৬ দফা ও ১১ দফার আন্দোলন অব্যাহত রাখার পক্ষে শপথ পাঠ করান বঙ্গবন্ধু।

ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ইয়াহিয়া খান আসন্ন ৩ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদ অধিবেশনের ঘোষণা দেন। এর দুদিন পরে বঙ্গবন্ধু এক ঘোষণায় বলেন, কামানের গুলির মুখেও তিনি ৬ দফা ছাড়া অন্য কোনো শাসনতন্ত্র গ্রহণ করবেন না।

অন্যদিকে ৬ দফার ক্ষেত্রে কোনো সমঝোতা না থাকায় ঢাকার অধিবেশনে তার দল যোগদান করবে না বলে জানান পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো। ভুট্টো আরও বলেন, 'ঢাকার অধিবেশনে শেখ মুজিব প্রণীত শাসনতন্ত্রে স্বাক্ষর না দিলে সংসদ কসাইখানায় পরিণত হবে।'

ওই বছর ১ মার্চ আসন্ন ৩ মার্চের জাতীয় অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। এদিনই লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াকুব খানের স্থলে লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক শাসনকর্তা পদে নিযুক্ত করেন ইয়াহিয়া খান।

কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের চার ছাত্র নেতার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

অসহযোগ আন্দোলন

আফসান চৌধুরীর '১৯৭১: অসহযোগ আন্দোলন ও প্রতিরোধ' গ্রন্থ সূত্রে জানা যায়, অধিবেশন স্থগিত হওয়ার ঘোষণার পরপরই ঢাকার রাস্তায় নেমে আসে সর্বস্তরের মানুষ। মানুষের কণ্ঠে তখন একটাই স্লোগান, 'পাকিস্তানের সহিত সম্পর্ক ছিন্ন করো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো।' তখন হোটেল পূর্বাণীতে চলছিলো আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি পার্টির সভা।

সভার একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু বেরিয়ে এসেই ২ মার্চ ঢাকায় ও ৩ মার্চ দেশব্যাপী হরতালের আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি ৭ মার্চের জনসভায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

অসহযোগ আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে ঢাকা শহরে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। এদিন ছাত্রলীগ ও ডাকসুর উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আয়োজিত ছাত্রসভায় মানচিত্র খচিত স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন ডাকসুর ভিপি আ স ম আবদুর রব।

পতাকা উত্তোলনের পরদিন সারাদেশে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতাল সফলভাবে পালিত হয়। এদিন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত পল্টন ময়দানের জনসভায় স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ। জনসভায় দেওয়া বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু ৬ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতাল পালনের নির্দেশ দেন।

৭ মার্চ দুপুরে রেসকোর্স ময়দানে আয়োজিত আওয়ামী লীগের সমাবেশে  স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বক্তব্যে তিনি পরবর্তী সপ্তাহের আন্দোলনের জন্য ১০ দফা কর্মসূচির পাশাপাশি ২৫ মার্চের অধিবেশনে যোগ দিতে চারটি শর্তের কথা উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের দুদিন পরেই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একাত্মভাবে সর্বাত্মক সংগ্রামের ঘোষণা দেন মওলানা ভাসানী।

অসহযোগ আন্দোলনের মাঝেই ১৫ মার্চ জরুরিভিত্তিতে ঢাকায় আসেন ইয়াহিয়া খান। পরবর্তী দুদিন প্রেসিডেন্ট ভবনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন ইয়াহিয়া খান। অন্যদিকে আসন্ন ২৩ মার্চের পাকিস্তান দিবসে প্রতিরোধ দিবস পালনের আহ্বান জানায় স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ।

'বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ' গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি সেনাদের অস্ত্র জমা দিয়ে নিরস্ত্র করার নির্দেশ দেয় পাকিস্তানি সামরিক প্রশাসন। এ সময় জয়দেবপুরে অবস্থানরত দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গলের বাঙালি সেনারা কৌশলে কালক্ষেপণ শুরু করেন।

১৯ মার্চ অবাঙালি ব্রিগেডিয়ার আবরারের জয়দেবপুরে আসার কথা ছিল। বাঙালি সেনাদের কাছে গোপনে বিষয়টি জানতে পেরে জাতীয় পরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা শামসুল হকের নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষ বাঙালি সেনাদের পক্ষে রাজপথে নেমে এসে রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড স্থাপন করে অবাঙালি সেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ।

মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পূর্ব মুহূর্তে এটিই ছিল দেশের প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ। সংঘর্ষে ১৩ জন শহীদ ও ৪০ জন আহত হন। জয়দেবপুরে জনতার সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর সংঘর্ষের দিনই ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বৈঠক করেন বঙ্গবন্ধু। তার দুদিন পরে ইয়াহিয়া ও ভুট্টোর সঙ্গে আবার বৈঠকে বসেন বঙ্গবন্ধু।

২৩ মার্চ বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিরোধ দিবস পালিত হয়। বঙ্গবন্ধুর ধানমণ্ডির বাড়িতেও উত্তোলিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। অন্যদিকে জাতীয় দিবস উপলক্ষে এদিন ইয়াহিয়া খান তার নির্ধারিত বেতার ভাষণ বাতিল করেন।

২৫ মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, 'সমাধান ক্রমেই অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে।'

এদিন সন্ধ্যায় গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেন ইয়াহিয়া খান। ইয়াহিয়া খানের ঢাকা ত্যাগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অপারেশন সার্চলাইটের নামে বর্বরোচিত গণহত্যা শুরু করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।

 

প্রথম পর্ব: ইনার গ্রুপ: স্বাধীনতার প্রথম প্রয়াস

দ্বিতীয় পর্ব: স্বাধীনতার পথে উত্তপ্ত ষাটের দশক

Comments

The Daily Star  | English

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

1h ago