‘জাস্টিন ট্রুডোর জন্মস্থান পাবনা ও বাবা-মায়ের জাতীয়তা বাংলাদেশি’
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নামে জন্ম নিবন্ধন করেছে পাবনার সুজানগর উপজেলার আহমেদপুর ইউনিয়ন পরিষদ। জন্ম নিবন্ধন সার্ভারে এ সংক্রান্ত একটি সনদ আপলোড করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জন্মস্থান পাবনা দেখিয়ে জাস্টিন ট্রুডোর নামে জন্মসনদ দেওয়া হয়েছে সুজানগর উপজেলার আহমেদপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে।
তবে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বলা হয়েছে, সার্ভার হ্যাক করে কেউ এ ধরনের জালিয়াতি করেছে।
ঘটনা অনুসন্ধানে পাবনা জেলা প্রশাসন একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
গণমাধ্যমের হাতে আসা ওই জন্মসনদ থেকে জানা গেছে, ট্রুডোর বাবার নাম পিয়েরে ট্রুডো ও মায়ের নাম মার্গারেট ট্রুডো। তাদের দুজনের জাতীয়তা বাংলাদেশি।
জাস্টিন ট্রুডোর জন্ম ১৯৭১ সালের ২৫ ডিসেম্বর। জন্ম নিবন্ধন নাম্বার ১৯৭১৭৬১৮৩১৭০৩৫৫০৯।
এ জন্ম নিবন্ধন সনদ সম্পর্কে জানতে চাইলে আহমেদপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল রব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি এমন জন্ম নিবন্ধনের ব্যাপারে আগে শুনিনি। গণমাধ্যম থেকে বিষয়টি জেনেছি।'
তার দাবি, জন্ম নিবন্ধন সার্ভার হ্যাক করে কেউ এ ধরনের জালিয়াতি করতে পারে।
জন্ম নিবন্ধন তালিকাভুক্তির সরকারী নিয়ম অনুযায়ী, জন্মসনদ পেতে ইউনিয়ন পরিষদে অথবা পৌরসভায় আবেদন করতে হয়। ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা সেই তথ্য যাচাই-বাছাই করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বা স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠায়।
সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদন সাপেক্ষে জন্মসনদ ইস্যু করার পর তা সরকারি ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়।
প্রতিটি নাগরিকের নাগরিকত্ব প্রমাণের সবচেয়ে বড় প্রমাণ তার জন্ম নিবন্ধন সনদ। সরকারের এতগুলো দপ্তরের চোখ ফাঁকি দিয়ে কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই সনদ ইস্যু করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুজানগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুখময় সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জাস্টিন ট্রুডোর নামে কোনো জন্মসনদের আবেদন আমার দপ্তরে জমা পড়েনি। এ ধরনের কোনো আবেদনের অনুমোদনও দেইনি।'
ইউএনওর অনুমোদন ছাড়া কীভাবে ইউনিয়ন পরিষদ জন্মসনদ ইস্যু করেছে জানতে চাইলে, ইউএনও বলেন, 'তদন্তের মাধ্যমে সঠিক তথ্য বের হয়ে আসবে।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাবনা জেলা প্রশাসক মো. আসাদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনা জানার পরই বিষয়টি তদন্ত করার জন্য পাবনা জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালককে প্রধান করে এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।'
'তদন্ত কমিটির প্রধান তদন্তের প্রয়োজনে আইটি এক্সপার্টসহ অন্যদের সহায়তা নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে,' বলেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আহমেদপুর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা নিলয় জন্ম নিবন্ধনের কাজ করতেন। টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন সময় জন্ম নিবন্ধনের কাজের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ইতোমধ্যে পুলিশ এ ঘটনার তদন্তে কাজ শুরু করেছে।
Comments