বৃহস্পতিবার যাবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে, সচিবদের সঙ্গে বসছেন আজ
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের মাধ্যমে মন্ত্রণালয় পরিদর্শন শুরু করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের পর ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি কৃষি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করবেন।
সরকারি কাজে গতি আনতে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক পরিদর্শনে গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই দ্রব্যমূল্য নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে নতুন সরকার। নানা চেষ্টা করেও দাম নিয়ন্ত্রণে তেমন সুফল মিলছে না। সামনে রমজান মাস থাকায় সরকারের প্রধান চিন্তা নিত্যপণ্যের দাম। এ কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কেই পরিদর্শনের শীর্ষে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরের ধাপেই রেখেছেন কৃষি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা, প্রধানমন্ত্রীর এরপরের পরিদর্শন তালিকায় থাকতে পারে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
প্রধানমন্ত্রীর পরিদর্শনের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সচিব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয় বা বিভাগ পরিদর্শনে যাবেন, এমন পরিকল্পনা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভালোভাবে প্রস্তুতি নেন। এ প্রস্তুতিটিই ওই মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত কাজকে কয়েকগুণ এগিয়ে দেয়।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আলাদা চাঞ্চল্য তৈরি হয়। সাধারণত মন্ত্রী ও সচিবরা সরকার প্রধানের সাহচর্য পান, মন্ত্রণালয়ে গেলে জুনিয়র কর্মকর্তারাও প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি দেখতে পান। এটি তাদের মধ্যে প্রণোদনার মতো কাজ করে।'
টানা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৯ সালে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক পরিদর্শন শুরু করেছিলেন শেখ হাসিনা। এবার চতুর্থবার নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করতে যাচ্ছেন।
সচিবালয় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত আমলে সরকার প্রধানের মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের কারণে সচিবালয়ের কাজে গতি এসেছিল। এবারও একই ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন তিনি।
বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে—চলমান প্রকল্প, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন অগ্রগতি, গত দেড় দশকে মন্ত্রণালয়ের অর্জন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ সামগ্রিক বিষয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করতে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন সরকার গঠন হলে সেই সরকারের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারের সঙ্গে মিলিয়ে কর্মসূচি গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়গুলো। আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারের স্লোগান ছিল 'স্মার্ট বাংলাদেশ: উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান'।
আওয়ামী লীগের ইশতেহারে দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মতো ১১টি বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনী ইশতেহারে এসব বিষয় লিখিতভাবে থাকলেও সরকার প্রধান প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়ে নিজে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎসাহ দিতে চান। যাতে তার সরকারের নেওয়া পরিকল্পনার বিষয়ে সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্তরিকভাবে কাজ করেন।
সচিব সভা আজ
সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের নিয়ে সচিব সভা হতে যাচ্ছে আজ সোমবার। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় এ সভায় শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।
আজকের সভায় দেশের সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর বিষয়ে ১২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা কথা বলতে পারেন।
বৈঠক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাণিজ্য, খাদ্য, কৃষি, স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা, কারিগরি ও মাদ্রাসা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, অর্থ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, জননিরাপত্তা এবং সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিবদের প্রধানমন্ত্রীর সামনে স্ব স্ব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোর সবশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরতে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
এর বাইরে প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে যেসব নির্দেশনা দেবেন সেসব বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে জানা গেছে।
Comments