বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হয়নি: যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।

নির্বাচনে সব দল অংশ না নেওয়া ও ভোটের দিন অনিয়মের খবরে উদ্বেগ জানিয়েছে দুই দেশ।

সোমবার এক বিবৃতিতে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, 'যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে একমত যে, এই নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ না করায় আমরা হতাশ।'

তিনি আরও বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র লক্ষ করেছে যে আওয়ামী লীগ দল ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় লাভ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিরোধী দলের কয়েক হাজার সদস্য গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের দিন অনিয়মের খবরে আমরা উদ্বিগ্ন।'

নির্বাচনের সময় এবং এর পরবর্তী মাসগুলোতে বাংলাদেশের সহিংসতার ঘটনায়ও নিন্দা জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণ এবং গণতন্ত্র, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য তাদের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে।

মিলার বলেন, 'আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার ঘটনাগুলো বিশ্বাসযোগ্যভাবে তদন্ত করতে এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করতে উৎসাহিত করি। আমরা সকল রাজনৈতিক দলকে সহিংসতা না করার আহ্বান জানাই।'

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে একটি অবাধ ও মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় (ইন্দো–প্যাসিফিক) অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অভিন্ন লক্ষ্যে কাজ করা, বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষা ও নাগরিক সমাজের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখা এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

অন্যদিকে, এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) মুখপাত্র বলেছেন, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচনের ফলাফল লক্ষ্য করেছে যুক্তরাজ্য। এই নির্বাচনকালীন সময়ে বিশ্বাসযোগ্য ও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার মান ধারাবাহিকভাবে পূরণ হয়নি বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, 'গণতান্ত্রিক নির্বাচন নির্ভর করে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতার ওপর। মানবাধিকার, আইনের শাসন ও যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অপরিহার্য উপাদান। নির্বাচনের সময় এসব মানদণ্ড ধারাবাহিকভাবে মেনে চলা হয়নি। ভোটের আগে বিরোধী দলের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।'

নির্বাচন সামনে রেখে এবং নির্বাচনের প্রচার চলাকালে সহিংসতা ও ভয়ভীতি দেখানোর কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'রাজনীতিতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কোনো স্থান নেই। সব দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। সে কারণে বাংলাদেশের মানুষের ভোট দেয়ার যথেষ্ট বিকল্প ছিল না।'

যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একটি টেকসই রাজনৈতিক সমঝোতা ও সক্রিয় নাগরিক সমাজের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে দীর্ঘ মেয়াদে দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে।

'বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে আমরা সকল রাজনৈতিক দলকে তাদের মতপার্থক্য দূর করতে এবং একটি অভিন্ন পথ খুঁজে বের করতে উৎসাহিত করি। আমরা এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন অব্যাহত রাখব,' বিবৃতিতে বলা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Unveil roadmap or it’ll be hard to cooperate

The BNP yesterday expressed disappointment over the absence of a clear roadmap for the upcoming national election, despite the demand for one made during its recent meeting with Chief Adviser Prof Muhammad Yunus.

7h ago