এসি বাসে ‘টাইম বোমা’, সুপারভাইজারের কৌতূহল বাঁচিয়ে দিলো যাত্রীদের প্রাণ
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বেঙ্গল পরিবহনের কক্সবাজারগামী যাত্রীবাহী বাসের সিটের ওপর মালিকবিহীন অবস্থায় একটি ব্যাগ দেখতে পান সুপারভাইজার মো. হাসান। কৌতূহলবশত ব্যাগটি খুলে সেখানে বোমা সদৃশ বস্তু দেখে কল দেন জাতীয় জরুরি সেবা '৯৯৯' নম্বরে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বোমা ডিসপোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে বোমা সদৃশ বস্তুটিকে টাইম জেনারেটিং ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) হিসেবে শনাক্ত করে।
আজ শনিবার এ তথ্য জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, 'বোমাটি বাসের ভেতর বিস্ফোরিত হলে যাত্রীসহ আরও অনেক প্রাণহানির শঙ্কা ছিল। বাসের স্টাফদের বিচক্ষণতায় বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।'
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে ঢাকার গাবতলী থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে বাসটি ছেড়ে যায়। সায়দাবাদ থেকেও যাত্রী ওঠেন। বাসটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন মৌচাক এলাকায় পৌঁছালে সুপারভাইজার হাসান যাত্রী গুনতে গিয়ে বাসের পেছনের একটি সিটে ব্যাগটি দেখতে পান। কিন্তু সেখানে তখন কোনো যাত্রী ছিল না।
এসপি বলেন, 'যাত্রী তালিকা থেকে ওই সিটের যাত্রীর মোবাইলে কল দিলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। পরে ব্যাগটি খুলে সেখানে বোমা সদৃশ বস্তু দেখতে পান তিনি। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডিএমপির বোমা ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেন। পরে সতর্কতার সঙ্গে বোমাটি বাস থেকে নামিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়।'
বোমা ডিস্পোজাল ইউনিটের বরাত দিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, 'এটি ছিল ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস, যা একটি টাইম জেনারেটিং শক্তিশালী বোমা।'
তিনি জানান, এতে একটি ঘড়ি, ব্যাটারি, গান পাউডার ও কয়েক বোতল পেট্রোল ছিল। ঘড়িটি একটি নির্দিষ্ট সময় পর অ্যাকটিভ হলে বড় বিস্ফোরণ হতো।
তিনি বলেন, 'বোমাটি ওই এসি বাসের ভেতর বিস্ফোরিত হলে যাত্রীসহ সবাই মারা যেতে পারতেন।'
বাসটিতে ১৬ জন যাত্রী ও তিনজন স্টাফ ছিলেন। পরবর্তী স্টপেজগুলো থেকেও যাত্রী ওঠার কথা ছিল।
বাসের স্টাফদের বরাত দিয়ে এসপি বলেন, 'যে সিটে ব্যাগটি পাওয়া গেছে ওই সিটের যাত্রী গাবতলী থেকে ওঠেন। তিনি সায়দাবাদ বাসস্ট্যান্ডে নামেন, কিন্তু আর ওঠেননি। আমরা ওই যাত্রীকে শনাক্ত করতে কাজ করছি।'
এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে।
Comments