বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করলেই উন্নয়ন অর্থবহ হবে: টিআইবি

আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ছবি: সংগৃহীত

'আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র'- এর অন্তর্নিহিত এজেন্ডা হলো কখনোই গণতন্ত্র নয়। জনমুখী উন্নয়নকে নিশ্চিত করতে হলে আগে চাই গণতন্ত্র বিশেষ করে বাকস্বাধীনতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। তাহলেই উন্নয়ন অর্থবহ হবে।

গণমাধ্যম ও বাক্‌স্বাধীনতা নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা আজ এই কথা বলেছেন। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)র কার্যালয় ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে টিআইবির পক্ষ থেকে দুর্নীতিবিরোধী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার এবং কার্টুন প্রতিযোগিতার পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'সমালোচক মাত্রই শত্রু- অবস্থান থেকে তাদের স্তব্ধ করে দেওয়া প্রবণতার দেখা যাচ্ছে এবং এর ফলে ভয়ের সংস্কৃতি আরও ঘনীভূত হচ্ছে। গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজের ওপর এর প্রভাবের কারণে, চাপে পড়ে সাংবাদিক ও উন্নয়নকর্মীরা পেশা পরিবর্তন করছেন, সেল্ফ সেন্সরশিপের চর্চা করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ, জবাবদিহিমূলক সরকার ব্যবস্থার সম্ভাবনা নিয়ে উৎকণ্ঠিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

তিনি বলেন, 'আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র'- এর অন্তর্নিহিত এজেন্ডা হলো কখনোই গণতন্ত্র নয়। জনমুখী উন্নয়নকে নিশ্চিত করতে হলে আগে চাই গণতন্ত্র বিশেষ করে বাকস্বাধীনতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। তাহলেই উন্নয়ন অর্থবহ হবে।'

টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, 'আগে সংবাদ রাজনৈতিক দল বা নেতার বিপক্ষে গেলে সাংবাদিকের ওপর চাপ সৃষ্টি হতো। আর এখন কোনো সংবাদ ব্যবসায়ী, আমলা বা অন্য কোনো গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গেলে সাংবাদিক হত্যার ঘটনাও ঘটে। সাংবাদিকরা দুর্নীতিকে উন্মোচন করেন বলেই তাদের ওপর চাপ বেশি থাকে। আমরা দেখছি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা সাইবার নিরাপত্তা আইনের মতো বিভিন্ন নিপীড়নমূলক আইন সাংবাদিকদের ওপরই বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের মনোভাব শূন্য সহনশীলতা থেকে ক্রমান্বয়ে 'সহনশীল' হয়েছে এবং এখন তা একপ্রকার খোলাখুলিভাবে 'প্রশ্রয়' দেওয়া হচ্ছে।'

আলোচনা শেষে টিআইবির দুর্নীতিবিরোধী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০২৩ ঘোষণা করা হয়। এ বছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৩ জন সাংবাদিক ও একটি প্রামাণ্য অনুষ্ঠানকে এই পুরস্কার দেয়া হয়। আঞ্চলিক সংবাদপত্র বিভাগে বিজয়ী হয়েছেন চট্টগ্রামের 'একুশে পত্রিকা ডট কম' এর প্রধান প্রতিবেদক শরীফুল ইসলাম (শরীফুল রুকন)। জাতীয় সংবাদপত্র বিভাগে বিজয়ী হয়েছেন 'দৈনিক কালের কণ্ঠ' পত্রিকার সাভার প্রতিনিধি জাহিদ হাসান শাকিল। টেলিভিশন বিভাগে বিজয়ী হয়েছেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার হাসান মিসবাহ। টেলিভিশন (প্রামাণ্য অনুষ্ঠান) বিভাগে বিজয়ী হয়েছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রামাণ্য অনুষ্ঠান 'তালাশ'।

সেই সঙ্গে 'দুর্নীতিবিরোধী কার্টুন প্রতিযোগিতা ২০২৩' এর পুরস্কার ঘোষণা এবং পনের দিনব্যাপী কার্টুন প্রদর্শনী এবং ভার্চুয়াল গ্যালারির উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে, সুইজারল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত কোরিন হেনচজ পিগনানি, ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনার ম্যাট ক্যানেল, ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান, দুর্নীতিবিরোধী কার্টুন প্রতিযোগিতার বিচারক কার্টুনিস্ট ও উন্মাদ পত্রিকার সম্পাদক আহসান হাবিব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka to pursue extradition of Hasina, Prof Yunus tells The Hindu

Bangladesh will pursue the extradition of ousted Prime Minister Sheikh Hasina from India, Chief Adviser Professor Muhammad Yunus told The Hindu

2h ago