মাগুরায় কাত্যায়নী উৎসব

উৎসব ঘিরে মাগুরা শহরকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। ছবি: স্টার

মাগুরায় ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী হৈমন্তী কাত্যায়নী পূজা শুরু হয়েছে। এই উৎসবকে ঘিরে মাগুরা শহরকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে মাগুরা।

গত শনিবার সন্ধ্যায় ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এ উৎসব। বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আগামী ২৩ নভেম্বর শেষ হবে কাত্যায়নী পূজা।

স্থানীয়রা জানান, পারনান্দুয়ালী গ্ৰামের জনৈক সতীশ মাঝি ১৯৫০ সালে শহরে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম এ পূজা উৎসব শুরু করেন। তিনি দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা সংক্ষিপ্ত করে প্রথম এককভাবে কাত্যায়নী পূজা শুরু করেন। বর্তমানে এই পূজা এখন উৎসবে রূপ নিয়েছে। এই পূজাকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষের ঢল নামে মাগুরায়।

তবে এ বছর হরতাল-অবরোধের কারণে দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীর উপস্থিতি একটু কম হবে বলে মনে করছেন আয়োজকরা।

উৎসব দেখতে আসা কারী নইমী রানি বলেন, 'আমরা যশোর বাঘারপাড়া থেকে এসেছি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল কাত্যায়নী পূজা মাগুরাতে উদযাপন হয়। তা ছাড়া এখানে আলোকসজ্জার কথা ভাষায় বলে ব্যক্ত করা যাবে না।'

ঢাকা থেকে আগত অজয় চক্রবর্তী বলেন, 'প্রতি বছর এখান এই সর্ববৃহৎ কাত্যায়নী পূজা দেখতে আসি। পাঁচ দিন অত্যন্ত আনন্দে কাটাই। সার মাগুরা শহর আলো ঝলমল করে।'

মাগুরার নান্না বিরানি হাউজের মালিক আলভিরুল ইসলাম জানান, এই উৎসব ঘিরে গত বছর প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার বিরানি বিক্রি করেছেন তিনি। এবার হরতাল ও অবরোধের কারণে লোকজন কম আসছে। তবে আগামীকাল থেকে বিক্রি বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

২৩ নভেম্বর শেষ হবে কাত্যায়নী পূজা। ছবি: স্টার

স্থানীয় চা-বিক্রেতা খাইরুল ইসলাম বলেন, 'সারা বছর যদি এই পূজা হতো, তবে আমাদের আর অভাব থাকত না। উৎসবকালে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার চা বিক্রি করি। স্বাভাবিক সময়ের প্রায় ছয় মাসের আয় এই পাঁচ দিনেই করি।'

জেলা পূজা বিষয়ক সম্পাদক তরুণ ভৌমিক জানান, এ বছর জেলায় মোট ৯৪টি মণ্ডপে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যার মধ্যে পৌর এলাকায় ১৯টি, সদর উপজেলায় ২৬টি, শ্রীপুরে ১৩টি, মহম্মদপুরে আটটি ও শালিখায় ২৮টি মণ্ডপে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে সব চেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল আয়োজন হচ্ছে ছানা বাবুর বট তলায়।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল দত্ত বলেন, 'প্রতিটি পূজামণ্ডপ ঘিরে তৈরি হয়েছে দৃষ্টিনন্দন গেট, প্যান্ডেল, তোরণ। আধুনিক লাইটিংয়ের মধ্যমে সাজানো হয়েছে পূজামণ্ডপগুলো। পূজা উপলক্ষে মেলা বসেছে শহরের ছানা বাবুর বটতলা ও উপজেলা পাড়া মণ্ডপস্থলে।'

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মহন লাল রায় বলেন, 'কাত্যায়নী পূজাকে কেন্দ্র করে মাগুরা শহর উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়। এটি জেলার ঐতিহ্য। দেশ-বিদেশ থেকেও মানুষ আসে এই পূজা দেখতে। তবে এবার হরতাল-অবরোধের কারণে দর্শনার্থীর উপস্থিতি কম।'

মাগুরা জেলা পুলিশ সুপার মশিউদ্দৌলা রেজা বলেন, 'এই পূজাকে কেন্দ্র করে জেলায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Hasnat calls for mass rally at Jamuna after Juma prayers demanding AL ban

The announcement came during an ongoing protest programme that began last night in front of Jamuna.

29m ago