সাভারে মজুরি বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
ঢাকার সাভার ও আশুলিয়ায় ন্যূনতম বেতন ২০ হাজার ৩৯০ টাকার দাবিতে বিক্ষোভ করছে কয়েকটি পোশাক কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সাভারের হেমায়েতপুর পদ্মার মোড় এলাকায় ও আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা শুরু হয়।
মজুরি বোর্ডের সর্বশেষ সভায় পোশাক শ্রমিকদের জন্য মালিকপক্ষের পক্ষ থেকে ১০ হাজার ৪০০ টাকা নূন্যতম মজুরি প্রস্তাবের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে শ্রমিকেরা।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সকালে পদ্মার মোড় এলাকায় প্রায় ২ হাজার শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিতে চাইলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে শ্রমিকরা। শুরু হয় শ্রমিকদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
পদ্মারমোরে বিক্ষোভে একাধিক শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সড়কে নামলে পুলিশ, বহিরাগতদের সাথে নিয়ে শ্রমিকদের মারধর করেছে। শ্রমিকদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। বহিরাগতরা প্রকাশ্যে রামদা হাতে খোলা প্রাইভেটকারে এলাকায় টহল দিচ্ছে।
এদিকে শ্রমিক অসন্তোষকে কেন্দ্র করে পদ্মারমোড় এলাকার বেশ কয়েকটি কারখানা আজকের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে।
জানতে চাইলে, আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ নাছের জনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মূলত পদ্মারমোড় এলাকায় ডার্ড গ্রুপের একটি বন্ধ কারখানার শ্রমিকরা তাদের বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে কারখানার সামনে জড়ো হয়। শ্রমিকরা পদ্মারমোড় এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে এবং আশেপাশের কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। আমরা তাদের বুঝিয়ে সরাতে গেলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। শ্রমিকরা এখন সরে গেছে।
পদ্মারমোড় এলাকায় এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের আশুলিয়ার জামগড়া ও ছয়তলা এলাকায় একই দাবিতে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে। পুলিশের সাথে শ্রমিকদের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ শ্রমিকদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করছে।
শিল্প পুলিশ-১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল বারী বলেন, 'সকাল থেকেই কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা সড়কে নেমে আসে। আমরা একপাশ থেকে তাদের সড়ক থেকে তুলে দেই। আবার অন্য পাশ থেকে তারা নামে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।'
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, মূলত মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলন করছে বলে শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি। বেশ কয়েকটি কারখানা আজ বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
গতকাল শ্রমিক আন্দোলনের মুখে সাভারের হেমায়েতপুর ও আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় অন্তত ৩০টি পোশাক কারখানা এক দিনের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। আজ কারখানাগুলো খুললেও বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ না করে বিক্ষোভ শুরু করে।
এছাড়া গতকাল মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে এক নারী শ্রমিক রাবার বুলেটে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিকেরা।
Comments