আমিনবাজারের চেকপোস্ট থেকে ‘আটক’ শতাধিক

আমিনবাজারে বাস থামিয়ে যাত্রীদের তল্লাশি চালান পুলিশ সদস্যরা। ছবি: আকলাকুর রহমান আকাশ/স্টার

রাজধানীতে দুই দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকার প্রবেশমুখ আমিনবাজার ও আশুলিয়ার বিরুলিয়ায় পুলিশের তল্লাশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। তাদের চেকপোস্ট থেকে এখন পর্যন্ত এক শতাধিক ব্যক্তিকে 'আটক' করা হয়েছে।

আজ শনিবার ভোর ৬টা থেকে চেকপোস্টে তল্লাশি চালানো শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ঘটনাস্থল থেকে দ্য ডেইলি স্টারের সংবাদদাতা জানান, যারাই এই চেকপোস্ট এলাকা দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের থামিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন করছেন কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা। এর মধ্যে যাদেরকে বিএনপির নেতাকর্মী হিসেবে মনে করা হচ্ছে, তাদের আটক করে আমিনবাজার ২০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে রাখা হচ্ছে।

সরেজমিনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার ২০ শয্যা হাসপাতালের সামনে বসানো পুলিশের চেকপোস্ট ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন গণপরিবহন, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল থেকে যাত্রীদের নামিয়ে যাত্রীদের গন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাচ্ছে পুলিশ। পথচারীদেরও একইভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানে কর্তব্যরত এক পুলিশ সদস্য জানান, এখন পর্যন্ত এক শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। 'উপর থেকে আমাদের এই ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে', বলেন তিনি।

আটকদের আমিনবাজার ২০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে রাখা হয়েছিল। ছবি: আকলাকুর রহমান আকাশ/স্টার

সিরাজগঞ্জ থেকে আসা এক বিএনপি কর্মীকেও আটক করে আমিনবাজার ২০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, 'সমাবেশে যোগ দিতে আমি ঢাকায় এসেছি। এখন আমাকে আটক করা হয়েছে।'

আশিকুর রহমান নামে রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি অফিসে যাচ্ছি। অফিসের পরিচয়পত্র দেখানোর পর আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এভাবে তল্লাশি চালানো দুঃখজনক।'

ঢাকা জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চেকপোস্ট মূলত যাদের বিএনপি নেতাকর্মী বলে মনে হচ্ছে, তাদেরকে আটক করে পাশের হাসপাতালে ঢোকানো হচ্ছে। এর মধ্যে অনেক সাধারণ মানুষও রয়েছেন। একটা অনুমতি প্রাপ্ত সমাবেশে আসার পথে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও আটক ন্যক্কারজনক। আমরা এর নিন্দা জানাই।'

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আব্দুল্লাহেল কাফি ডেইলি স্টারকে বলেন, রাজধানীতে দুটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশ রয়েছে। কেউ যেন ঢাকায় প্রবেশ করে কোনো ধরনের নাশকতা কিংবা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করতেই আমাদের এই চেকপোস্ট কার্যক্রম চলছে। সাভারের আশুলিয়া, বিরুলিয়া ও আমিবাজারে আমাদের চেকপোস্ট কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যারা সন্দেহভাজন, এই চেকপোস্টে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি আটক বলব না। আসলে যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, আমরা তাদেরকে গ্রেপ্তার করছি। আর যাদের সন্দেহ হচ্ছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কিছু সময় আমাদের হেফাজতে রাখা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত কতজনকে আটক করা হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এই মুহূর্তে প্রকৃত সংখ্যাটা বলা যাচ্ছে না'।

আটকদের প্রিজন ভ্যানে করে সাভার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে সকাল সোয়া ১০টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে জানিয়েছেন ডেইলি স্টারের সংবাদদাতা।

এর আগে গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে আশুলিয়া থেকে জামায়াতের ৪৩ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আশুলিয়া থানার পুলিশ।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus opens second round of talks to strengthen national unity

'Beautiful July Charter' would be unveiled following discussions, he says

6m ago