ম্রো ভাষায় অনূদিত হলো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণটি ম্রো ভাষায় অনুবাদ করেছেন এই পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর লেখক ইয়াংঙান ম্রো।
আজ শনিবার দুপুরে বান্দরবান-চিম্বুক সড়ক সংলগ্ন রামরি পাড়ার পাহাড়ের 'জুম ঘর লাইব্রেরিতে' ৭ মার্চের ভাষণের ম্রো ভাষার অনুবাদের বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। ম্রো ভাষায় বইটির নামকরণ করা হয়েছে 'বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমান তেকঅমি ৭ বিলা খেকো লাইক্লো'।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সমবেত জনসমুদ্রে জাতির উদ্দেশে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু। তার এই ভাষণ জাতিকে অনুপ্রাণিত করে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে। ২০১৭ সালে ইউনেস্কো এই ঐতিহাসিক ভাষণকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
অনুবাদক-লেখক ইয়াংঙান ম্রো জানান, ছেলেবেলায় জুমঘরে মা-বাবাসহ পরিবারের প্রবীণদের কাছ থেকে মাতৃভাষায় বিভিন্ন রূপকথার পাশাপাশি স্বাধীনতা যুদ্ধে পাহাড়ে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার বিবরণ শুনতেন তিনি। তার মা-বাবার আশা ছিল এ সমস্ত গল্প যেন বংশপরম্পরায় ছড়িয়ে যায়। সেই ভাবনা থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি ম্রো ভাষায় অনুবাদের কথা চিন্তা করেন।
বান্দরবান জেলার পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোর ভেতর ম্রো জনগোষ্ঠী দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ। ২০২২ সালের জনশুমারি অনুসারে এই জনগোষ্ঠীর ৫০ হাজারের বেশি মানুষ পাহাড়ের অন্য জনগোষ্ঠীর তুলনায় খুবই অনগ্রসর। তবে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ নিজের ভাষায় লিখতে ও পড়তে পারেন।
ম্রো ভাষায় অনূদিত হওয়ায় এখন ম্রো জনগোষ্ঠীর লোকজন বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্পর্কে জানতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন ইয়াংঙান ম্রো। এছাড়া ভবিষ্যতে পাহাড়ি মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের নিয়েও ম্রো ভাষায় বই লেখার পরিকল্পনা আছেন বলেও জানান তিনি।
একইদিনে লেখকের ম্রো সমাজের পৌরাণিক লোককাহিনীসহ ১০০টি রূপকথার গল্প নিয়ে আরেকটি বইয়ের মোড়কও উন্মোচন করা হয়।
ম্রো সম্প্রদায়ের এই লেখক-গবেষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্য ভাষা ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতকোত্তর শেষে লেখকজীবন বেছে নিয়েছেন। ম্রো ভাষায় প্রথম প্রকাশিত বইয়ের লেখকও তিনি। ম্রো ভাষায় প্রকাশিত তার বইয়ের সংখ্যা ১৫। এর পাশাপাশি বাংলা ভাষাতেও ১২টি বই লিখেছেন তিনি।
Comments