সংলাপসহ ৫ সুপারিশ মার্কিন প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের

গত ১০ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে মার্কিন প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে বিশ্বাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক এবং অহিংস নির্বাচনের জন্য অগ্রগতির রোডম্যাপ হিসেবে পাঁচ সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল।

সুপারিশের মধ্যে রয়েছে সহনশীল বক্তব্য ও নির্বাচনী ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা এবং ভিন্নমতকে সম্মান করা হয় এমন অবস্থা নিশ্চিত করা।

পর্যবেক্ষক দল অহিংসার প্রতি অঙ্গীকার এবং রাজনৈতিক অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার পরামর্শও দিয়েছে। সেইসাথে স্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা এবং নাগরিকদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের সংস্কৃতি তৈরি করারসহ সব দলকে অর্থবহ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পরিবেশ তৈরির সুপারিশ করা হয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধিদল গত ৮ থেকে ১১ অক্টোবর বাংলাদেশ সফর করে। মিশন শেষে বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এই সুপারিশগুলো করেছে পর্যবেক্ষক দল।

তাদের সফরের পর আজ এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ দেশটিকে ২০৪১ সালের রূপকল্প অর্জনের ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করেছে।

তবে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। এরমধ্যে আপস না করতে চাওয়া, রাজনীতিতে অপরকে পরাজিত করে নিজেকে জয়ী ভাবা, উস্কানিমূলক বক্তব্য, রাজনৈতিক সহিংসতা, অনিশ্চয়তা ও ভয়ের পরিবেশ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাগরিকদের মধ্যে আস্থার ঘাটতি।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ একটি সন্ধিক্ষণে রয়েছে এবং আসন্ন নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক, অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি দেশের অঙ্গীকারের পরীক্ষা।

পর্যবেক্ষক দলের সদস্য কার্ল ইন্ডারফুর্থ বলেন, 'আমরা মনে করি প্রাথমিক সমস্যা প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনার অভাব। এ অচলাবস্থার অবসান ঘটানোর সর্বোত্তম উপায় ২০২৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচন ও পরে পরস্পর আস্থাপূর্ণ সংলাপে বসা।'

প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল অবশ্য স্বীকার করেছে যে বাংলাদেশের জনগণই চূড়ান্তভাবে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও বৈধতা এবং দেশের গণতান্ত্রিক উন্নয়ন নির্ধারণ করবে।

যৌথ প্রতিনিধি দলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন বনি গ্লিক (আইআরআই কো-চেয়ার), ইউএসএআইডির সাবেক ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর; কার্ল এফ ইন্ডারফার্থ (এনডিআই কো-চেয়ার), দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক প্রাক্তন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী; মারিয়া চিন আবদুল্লাহ, মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি পরিষদের প্রাক্তন সদস্য; জামিল জাফর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির প্রাক্তন সহযোগী পরামর্শদাতা; আইআরআই'র এশিয়া-প্যাসিফিক ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ পরিচালক জোহানা কাও; মনপ্রীত সিং আনন্দ, এনডিআই আঞ্চলিক পরিচালক, এশিয়া-প্যাসিফিক। প্রতিনিধিদের সাথে এনডিআই এবং আইআরআইয়ের প্রযুক্তিগত এবং কান্ট্রি এক্সপার্টরাও যোগ দিয়েছিলেন।

সফরে প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বর্তমান ও সাবেক নারী সংসদ সদস্য, যুব, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সঙ্গে জড়িত সংস্থার প্রতিনিধি, মিডিয়া প্রতিনিধি, আইনজীবী এবং আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে।

 

Comments

The Daily Star  | English

BNP's name being misused for personal gains: Rizvi

He urges party men to remain vigilant against committing misdeeds

1h ago