কবি রাধাপদ রায়ের ওপর হামলা: উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়ে ২৫ নাগরিকের বিবৃতি

কবি রাধাপদ রায়। ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর স্বভাব-কবি হিসেবে খ্যাত রাধাপদ রায়ের (৮০) ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৫ জন নাগরিক।

আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে হামলা ও নির্যাতনে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং তদন্তের দাবি জানান তারা।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে উপজেলার ভেতরবন্দ ইউনিয়নের গোদ্দারেরপাড় এলাকার নিজ বাড়িতে কবি রাধাপদ রায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন।

বিবৃতিতে বলা হয়, রাধাপদ রায়কে নির্যাতনের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও সংস্কৃতিজনের উপর হামলা নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। কিছু দিন আগেও দেশের বিভিন্ন স্থানে বাউল শিল্পী ও নাট্যকর্মীর উপর হামলা, বাউলের বাদ্যযন্ত্র ও পাণ্ডুলিপিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে, যার কোনোটিই রাষ্ট্র ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেনি।

'আমরা মনে করি, প্রতিটি ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে আখ্যা দেওয়ার প্রবণতা এ ধরনের ঘটনা বৃদ্ধির জন্য দায়ী,' বলেন বিবৃতিদাতারা।

তারা মনে করেন, 'সংস্কৃতি চর্চা বন্ধ করে দেওয়ার যে আয়োজন দেশব্যাপী চলছে, তার সাথে এই ঘটনাকে পৃথক করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। যে কোনো কারণ বা প্রকারেই এ ধরনের ঘটনা ঘটুক না কেন এর পেছনে একটি বৃহৎশক্তি রয়েছে, যারা দেশ থেকে সংস্কৃতি চর্চা নির্বাসনে পাঠাতে চায়, যারা রাধাপদ রায়ের মতো সংস্কৃতিসেবীদের একের পর এক আক্রমণ করে চলেছে।

সংস্কৃতির বিরুদ্ধে বিদ্বেষপোষণকারী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দিন দিন যত বাড়ছে, তার সাথে পাল্লা দিয়ে আামাদের সংস্কৃতিকর্মী কিংবা সাংস্কৃতিক আয়োজন বাড়েনি। বরং জাতীয় সাংস্কৃতিক আয়োজনকে সঙ্কুচিত করা হয়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে প্রত্যেক সচেতন নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে। একইসাথে কুড়িগ্রামের সংস্কৃতি কর্মী নির্বিশেষে  রাধাপদ রায়ের পাশে থাকবেন এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।'

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য রামেন্দু মজুমদার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি  অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশ গুপ্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম. এম. আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধ্যাপক ড. জোবায়দা নাসরিন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পারভেজ হাসেম, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দীপায়ন খীসা, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক জীবনানন্দ জয়ন্ত, গবেষক ও সংস্কৃতি কর্মী ড. সেলু বাসিত, আনন্দনের প্রধান সংগঠক এ কে আজাদ, খেলাঘরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির, সমাজ কর্মী জাহাঙ্গীর আলম সবুজ, সংস্কৃতি কর্মী অলক দাস গুপ্ত, মানবাধিকার কর্মী আবদুল আলীম, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশের (ইনসাব) সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি (বিসিএল) গৌতম শীল।

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

4h ago