সাভারে বকেয়া বেতনের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ

বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরে দীপ্ত এপারেল লিমিটেডের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরে দীপ্ত এপারেল লিমিটেডের শ্রমিকদের আগস্ট মাসের বেতন আগামী ১০ তারিখের মধ্যে পরিশোধের দাবিতে কারখানায় কর্মবিরতি দিয়ে বিক্ষোভ করেছে প্রতিষ্ঠানটির সহস্রাধিক শ্রমিক।

এসময় ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ বিভাগের দুই জন কর্মকর্তা, একজন নিরাপত্তা কর্মীসহ অন্তত ৫/৬ জন স্টাফদের মারধর করেছেন বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাভার জোনের সিকিউরিটি ইন্সপেক্টর মো. আসাদ।

এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির সহকারী ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ) মারুফ, কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর প্রদীপ ও নিরাপত্তা কর্মী সম্রাট আহত হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিন জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বাকিদের নাম জানার চেষ্টা চলছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ৯ টারদিকে হেমায়েতপুরের শ্যামপুর এলাকায় অবস্থিত কারখানাটিতে এই ঘটনা ঘটে। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে বাসায় ফিরে যায়।

কারখানারটির শ্রমিক মিজানুর রহমান বলেন, ৩/৪ দিন আগে কারখানা কর্তৃপক্ষ অর্থনৈতিক সংকটের কারণ দেখিয়ে গত মাসের বেতন আগামী ১০ তারিখের পরিবর্তে ১৮ তারিখে পরিশোধের ঘোষণা দেয়। এর পর থেকেই শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ ছিল। শ্রমিকদের দাবি ৮ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে গত ৩/৪ দিন কয়েক দফায় কারখানার সাধারণ শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে। এক পর্যায়ে হঠাৎ করেই মালিকপক্ষ গতকাল একদিনের জন্য কারখানা বন্ধ রাখেন। আজ সকালে কারখানা খোলার পর শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়ার পর ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলতে গেলে তাদের সাথে শ্রমিকদের কথা-কাটাকাটি হয়, এক পর্যায়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। এছাড়াও কারখানার মিড লেভেল কর্মীদের গত ৫ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে, মালিকপক্ষ তাদেরও বেতন পরিশোধ করছে না, আজকের আন্দোলনে তারাও শ্রমিকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানাটির একজন মিড লেভেল কর্মী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মালিকপক্ষ পরিষ্কারভাবে কখনোই কিছু জানায় না। আমাদের ৫/৬ শ কর্মীর চলতি মাসসহ ৫ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। কবে বেতন দেওয়া হবে মালিকপক্ষের কাছে জানতে চাইলে তাকে বের করে দেওয়া হয়। আবার বেতন দেওয়ার সময় হলে শ্রমিকদের ছুটি হওয়ার আগেই সিনিয়র কর্মকর্তারা কারখানা থেকে বেড়িয়ে যান।

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) মো. মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কারখানাটিতে সব মিলিয়ে প্রায় ৩২০০ কর্মী রয়েছে। বেতন নিয়ে কারখানাটিতে সমস্যা রয়েছে, কারখানার অভ্যন্তরে বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত ঝামেলা চলছে। আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে, কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

কারখানাটিতে শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনায় মালিকপক্ষ কিছু জানিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, কারখানাটির মালিকপক্ষ সেভাবে আমাদের কিছু জানায়নি। বেতন নিয়ে ঝামেলা আছে এটা জানি।

কারখানাটিতে চলামান  সংকট নিয়ে কথা বলতে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা ফোন ধরেননি।

Comments

The Daily Star  | English
Reforms vs election

Reforms vs election: A distracting debate

Those who place the election above reforms undervalue the vital need for the latter.

16h ago