বহুল প্রতীক্ষিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন আজ
বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আজ উদ্বোধন হচ্ছে। দ্রুতগতির এই উড়ালসড়কের দৈর্ঘ্য ১৯.৭৩ কিলোমিটার। আজ শনিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক্সপ্রেসওয়ের ১১.৫ কিলোমিটার অর্থাৎ বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করবেন।
উদ্বোধনের পর আগামীকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত অংশে সাধারণ যানবাহন চলাচল করতে পারবে। আগামীকাল থেকে এই সড়ক দিয়ে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেটে পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র ১০ মিনিট, যা যানজটের কারণে এখন প্রায় ১ ঘণ্টার মতো লাগে।
শহরের যানজট নিরসনের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়ার এক দশকেরও বেশি সময় পরে এটির উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় পরিবহন খাতে এটাই প্রথম প্রকল্প।
সম্পূর্ণ এক্সপ্রেসওয়ে অর্থাৎ তেজগাঁও থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত আগামী বছরের জুনে চালু করার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
সেতু বিভাগের সচিব মঞ্জুর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের জন্য আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।'
প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা এলাকায় উত্তর প্রান্ত থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশ করবে এবং সেখানে টোল প্লাজায় টোল পরিশোধ করবে বলে জানান তিনি।
বিকেল ৪টার দিকে আগারগাঁওয়ে পুরোনো বাণিজ্য মেলা মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন ও মোনাজাতে অংশ নেবেন। এরপর সেখানে সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
উদ্বোধনের জন্য এক্সপ্রেসওয়ের দুপাশ প্লাকার্ড ও পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছে। তবে, আগামীকাল সকাল ৬টায় জনসাধারণের যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার আগে সেগুলো সরিয়ে ফেলা হবে।
প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে কুড়িল এলাকায় একটি কন্ট্রোল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। পিপিপি প্রকল্পের ৩টি প্রাইভেট অংশীদারের মধ্যে একটি চীনা ফার্ম 'চায়না শানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কর্পোরেশন' এই কন্ট্রোল সেন্টারটি পরিচালনা করবে।
কুড়িল, বনানী, মহাখালী এবং তেজগাঁও হয়ে বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশটি শহরের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর থেকে আসা-যাওয়ার বিকল্প রুট হিসেবে কাজ করবে।
পুরো উড়ালসড়কে ৩১টি স্থান দিয়ে যানবাহন ওঠানামা (র্যাম্প) করার ব্যবস্থা থাকছে। কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশে ওঠা নামার জন্য মোট ১৫ টি র্যাম্প থাকবে। এর মধ্যে ১৩টি র্যাম্প আগামীকাল যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ ৩ চাকার যান ও বাইসাইকেল চলাচল করতে পারবে না। অন্যান্য যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে শহরের যানজট কমাতে যে দুটি এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হচ্ছে তার মধ্যে একটি। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উড়ালসেতুর সম্পূর্ণ সুবিধা পেতে দুটি এক্সপ্রেসওয়ে চালু হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
দুটি এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে দেশের উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে ঢাকা হয়ে যাতায়াতের সময় রাজধানীর যানজট এড়ানো সম্ভব হবে। ট্রাক এবং লরি, যা এখন দিনের বেলা শহরে প্রবেশ করতে পারে না, সেগুলোও এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে পারবে৷
Comments