সাবেক বিমানবাহিনী প্রধান বীর উত্তম সুলতান মাহমুদ মারা গেছেন

১৯৭১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ভারতের নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরের একটি পরিত্যক্ত ঘাঁটিতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যাত্রা শুরু হয়। এর সাংকেতিক নাম দেওয়া হয় অপারেশন কিলোফ্লাইট। সুলতান মাহমুদকে অপারেশন কিলোফ্লাইটের অধিনায়ক করা হয়।  
বীর উত্তম সুলতান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক বিমানবাহিনী প্রধান বীর উত্তম সুলতান মাহমুদ মারা গেছেন। সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি মারা যান।

তার ছেলে রাজিব মাহমুদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

১৯৭১ সালের শুরুর দিকে পাকিস্তানের করাচির মৌরিপুর বিমানঘাঁটিতে স্কোয়াড্রন লিডার পদে কর্মরত ছিলেন সুলতান মাহমুদ। মে মাসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে তিনি করাচি থেকে শ্রীলংকায় পালিয়ে যান।সেখান থেকে পালিয়ে ঢাকায় এসে কিছুদিন অবস্থানের পর চলে যান ভারতে।

শুরুতে ২ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করলেও পরে তাকে ১ নম্বর সেক্টরে নিযুক্ত করা হয়। ৬ অক্টোবর সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর একটি দল মদুনাঘাট সাব স্টেশনের ৫০ ফুট দূরত্বে এসে গুলিবর্ষণ করে ৩টি ট্রান্সফরমার ধ্বংস করে। এ সময় পাকিস্তানি সেনাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে আহত হন সুলতান মাহমুদ। 

২৮ সেপ্টেম্বর ভারতের নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরের একটি পরিত্যক্ত ঘাঁটিতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যাত্রা শুরু হয়। এর সাংকেতিক নাম দেওয়া হয় অপারেশন কিলোফ্লাইট। সুলতান মাহমুদকে অপারেশন কিলোফ্লাইটের অধিনায়ক করা হয়।  

৩ ডিসেম্বর রাতে ভারতের কৈলাশহর বিমানঘাঁটি থেকে একটি অ্যালুয়েট থ্রি হেলিকপ্টার দিয়ে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলের ইউএসএসওর তেলের ডিপোতে দুই দফা আক্রমণ চালিয়ে পুরোপুরি ধ্বংস করেন সুলতান মাহমুদ ও তার সহযোদ্ধারা। 

মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে ক্যাপ্টেন সাহাবউদ্দিনের সঙ্গে সিলেট শহর পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের মুখোমুখি হয়েছিলেন সুলতান মাহমুদ। তাদের হেলিকপ্টারে গুলি লাগলেও সে যাত্রায় তারা ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

সুলতান মাহমুদের জন্ম ১৯৪৪ সালে ফেনীর দাগনভূঁইয়া উপজেলার নিজকুঞ্জরা মজলিশ বাড়িতে। ১৯৬০ সালে পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে যোগ দেন সুলতান মাহমুদ। 

১৯৮১ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন সুলতান মাহমুদ বীর উত্তম।

Comments