রোহিঙ্গা সংকটে বিশ্বকে বাংলাদেশের পাশে থাকার আহ্বান মার্কিন কংগ্রেস প্রতিনিধি দলের

রোহিঙ্গা সংকটে বিশ্বকে বাংলাদেশের পাশে থাকার আহ্বান মার্কিন কংগ্রেস প্রতিনিধি দলের
ছবি: স্টার

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা ও উত্তরণে বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস প্রতিনিধি দল।

আজ সোমবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে তারা এই আহ্বান জানান।

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে আশ্রয় প্রদান ও তাদের যথাযথ ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রশংসা করেন এবং ধন্যবাদ জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির কংগ্রেস সদস্য এড কেইস বলেন, 'রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লোকজনের সঙ্গে আলাপ করেছি। আলাপকালে রোহিঙ্গারা তাদের খাদ্য সহায়তা কমিয়ে দেওয়া, লেখা-পড়ার ব্যবস্থা, বর্তমান জীবনযাপন নিয়ে কথা বলেছেন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গারা তাদের দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য আমাদের কাছে দাবিও জানিয়েছেন। এসব বিষয় প্রতিবেদন আকারে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে অবহিত করা হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিকতার এক অনন্য উদাহারণ সৃষ্টি করেছে। এ জন্য বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।'

প্রতিনিধি দলের আরেক সদস্য রিপাবলিকান পার্টির রিচার্ড ম্যাকরমিক বলেছেন, 'রোহিঙ্গাদের ব্যবস্থাপনায় জড়িত কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে যে তথ্য পেয়েছি, তা লিখিতভাবে আমেরিকা সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হবে। রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।' 

এই সংকট মোকাবিলা ও উত্তরণের জন্য বিশ্বের সব রাষ্ট্রকে একযোগে বাংলাদেশের পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি। 

এই ২ সদস্য রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা বৃদ্ধিতে কাজ করারও আশ্বাস প্রদান করেছেন। 

আজ সন্ধ্যায় কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে   প্রতিনিধিগণ গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।  

এর আগে আজ সোমবার সকাল ৯টায় তারা কক্সবাজার বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। এরপর উখিয়া উপজেলার বালুখালীসহ ১২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে পৌঁছান বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির কংগ্রেস সদস্য এড কেইস ও রিপাবলিকান পার্টির রিচার্ড ম্যাকরমিকের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ১১ জন সদস্য ছিলেন। 

শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার সামছু-দৌজা নয়ন দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, সকাল ৯টায় কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমন্বয় সংস্থা ইন্টার সেক্টর কোঅর্ডিনেশন গ্রুপের অফিসে জাতিসংঘের শরনার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএমসহ ইউএনের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। 

পরে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কংগ্রেস প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান। সেখানে প্রতিনিধি দল ১২ নম্বর ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম, ১১ নম্বর ক্যাম্পে লার্নিং সেন্টার ও জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি পরিচালিত ই-ভাউচার সেন্টার পরিদর্শন করেন। 

দুপুরে কংগ্রেস প্রতিনিধি দল কুতুপালং ক্যাম্পে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। 

এরপর কক্সবাজার শহরে ফেরার সময় প্রতিনিধি দলের হাতে একটি চিঠি হস্তান্তর করেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়ের।

মোহাম্মদ জোবায়ের জানিয়েছেন, চিঠিটিতে ক্যাম্প জীবন কষ্টকর এবং অসহনীয় উল্লেখ করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। সম্মানজনক নাগরিক মর্যাদার সঙ্গে নিরাপত্তাসহ মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি পেলে রোহিঙ্গারা যেকোনো মুহূর্তে মিয়ানমারে ফিরে যাবেন।

বিকেলে কক্সবাজার শহরে অবস্থিত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে ঢাকায় ফিরে গেছেন প্রতিনিধি দল।

 

Comments

The Daily Star  | English

Effective tariff for RMG exports to US climbs to 36.5%: BGMEA

The tariff will be a bit less if 20% of the cotton used in garment production is sourced from the USA

46m ago