দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ পয়ঃশোধনাগার উদ্বোধন

ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় দক্ষিণ এশিয়ার একক বৃহত্তম পয়ঃশোধনাগার উদ্বোধন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দেশে প্রথমবারের মতো ঢাকার দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্ল্যান্টের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

একই অনুষ্ঠানে, তিনি বিশ্বব্যাংক এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টম্যান্ট (এআইআইবি) এর সহযোগিতায় পাগলা স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের পুনর্গঠন এবং সম্প্রসারণেরর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এতে দৈনিক পিয়ঃনিষ্কাশন শোধনের ক্ষমতা দাঁড়াবে ২শ কোটি মেট্রিক টন।

তিনি বলেন, 'আমি আনুষ্ঠানিকভাবে দাশেরকান্দি পয়ঃনিষ্কাশন প্ল্যান্টের এবং পাগলা স্যুয়ারেজ ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্টের পুনর্গঠন এবং সম্প্রসারন কাজের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করছি।'

দাশেরকান্দি প্লান্টের দৈনিক ৫০ লাখ টন পয়ঃনিষ্কাশন শোধনের ক্ষমতা রয়েছে, যা রাজধানীর মোট পয়ঃনিষ্কাশনের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ।

রাজধানীর আশপাশের নদীগুলোকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে এই প্ল্যান্ট মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।

চীনের অর্থায়নে ৩৪৮২ দশমিক ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৬২ দশমিক ২ একর জমিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। ব্যয়ের মধ্যে ১১০৬ দশমিক ৪২ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে, ১০ কোটি টাকা ওয়াসা তহবিল থেকে এবং অবশিষ্ট ২,৩৬৬ কোটি টাকা চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক থেকে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে এসেছে।

২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকার শতভাগ পয়ঃনিষ্কাশন শোধনের জন্য পাগলা, উত্তরা, রায়েরবাজার এবং মিরপুর এলাকায় আরও চারটি পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার নির্মাণের লক্ষ্যে সরকারের একটি মহাপরিকল্পনা রয়েছে। এই বর্জ্যরে ৯০ শতাংশ পাইপলাইন কাভারেজের মাধ্যমে এবং অবশিষ্ট ১০ শতাংশ বাসাবাড়িগুলো থেকে সংগ্রহ করা হবে।

২০৩০ সালের মধ্যে সারাদেশে উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্ল্যান্টটি এসডিজি লক্ষ্য-৬ বাস্তবায়নে সহায়তা করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে একটি সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আওতায় আনার পথপ্রদর্শক।

দাশেরকান্দি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, যা খিলগাঁও থানার অন্তর্গত, আফতাবনগর সংলগ্ন এবং গুলশান (একাংশ), বনানী, তেজগাঁও, নিকেতন, মগবাজার, মালিবাগ, আফতাবনগর, বাড্ডা, কলাবাগান, পান্থপথ, ধানমন্ডি (একাংশ) ও হাতিরঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করবে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম ও বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

প্রকল্পটিতে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টন প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতাসহ স্লাজ শুকানো ও পোড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। ২০১৭ সালের ১ আগস্ট এই প্লান্টের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

পাওয়ার চায়নার অধীনে চেংডু ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন প্রকল্পের ডিজাইন ও নির্মান শেষে প্রকল্পটি এক বছরের কার্যক্রম ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে ওয়াসার কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ঢাকার চারপাশে নদী দূষণ রোধে পাঁচটি শোধনাগার নির্মাণের জন্য ২০১৩ সালে ওয়াসা কর্তৃক গৃহীত মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে দাশেরকান্দি স্যুয়ারেজ ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্টটি নির্মিত হয়েছে।

প্রকল্প অনুযায়ী, প্রগতি সরণিতে রামপুরা সেতুর পশ্চিম পাশে একটি বর্জ্য উত্তোলন স্টেশন, রামপুরা থেকে আফতাবনগর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার ট্রাঙ্ক স্যুয়ারেজ লাইন এবং দাশেরকান্দিতে মূল শোধনাগার নির্মিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা ওয়াসা, দাশেরকান্দি স্যুয়ারেজ ট্রিটম্যান্ট প্লান্ট ও পাগলা স্যুয়ারেজ ট্রিটম্যান্ট প্লান্টের পৃথক তিনটি ভিডিও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

‘Shockingly insufficient’

"The proposed decision to allocate USD 250 billion per year for all developing countries is shockingly insufficient," said the adviser

3h ago