মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা

‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকসহ নির্বাচনী প্রক্রিয়া কঠোর নজরদারিতে থাকবে’

ছবি: সংগৃহীত

সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের সঙ্গে যাতে আপস করতে না হয়, সেজন্য কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের আইনবহির্ভূত চর্চা প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র গতকাল নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করার পর আজ বৃহস্পতিবার দেওয়া বিবৃতিতে এ কথা বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'নির্বাচন কমিশন স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকসহ নির্বাচনী প্রক্রিয়া কঠোর নজরদারির মধ্যে থাকবে।'

এতে বলা হয়, সরকার আশা করে, স্থানীয় যে অগণতান্ত্রিক শক্তি সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় তারা সতর্ক থাকবে এবং সংবিধানে নির্দেশিত নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে তাদের বিভ্রান্তিকর অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকবে। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের অর্জনকে ধরে রাখা পুরোপুরি দেশের জনগণের ওপর নির্ভর করে।

বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত অঙ্গীকারের প্রতি জোরালো সমর্থনের জন্য সরকার বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রশংসা করেছে।

অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে গতকাল রাতে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। তাদের মধ্যে বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, সরকারপন্থী ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত।

তারই প্রতিক্রিয়ায় দেওয়া বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড অ্যাক্টের তথাকথিত ৩সি ধারা অনুযায়ী ভিসায় বিধিনিষেধের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের ঘোষণাটি নজরে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখার স্বার্থে দেশের সব স্তরে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের দ্ব্যর্থহীন অঙ্গীকারের বৃহত্তর প্রেক্ষাপট থেকে মার্কিন এই ঘোষণাকে বিবেচনায় নিতে চায়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক ও ভোটাধিকারের বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন। বাংলাদেশে কোনো সরকারের ভোট কারচুপির মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার নজির নেই। জনগণের ভোটাধিকারকে আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রীয় পবিত্রতা বলে মনে করে, যে রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের জন্য দলটিকে নিরলস সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। সরকার সব ধরনের বৈধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য শান্তিপূর্ণ সভা ও সমাবেশকে গুরুত্ব দেয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সব অংশীজনকে নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নির্বাচনী সংস্কারের প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে জারি করা ১ কোটি ২৩ লাখ জাল ভোটারের বিষয়টি সুরাহার জন্য ছবি সংবলিত ভোটার পরিচয়পত্র চালু করা হয়েছে। ভোটারদের পাশাপাশি ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা ও পোলিং এজেন্টদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের বিধান চালু হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন কমিশন (ইসি) অব্যাহতভাবে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গে নিজের কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছে।

'বর্তমান সরকার প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদে গৃহীত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এ আইন অনুযায়ী নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ অনুযায়ী, পুরো নির্বাহী প্রশাসন বাধ্যতামূলকভাবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে থেকে কমিশনের নির্দেশিত প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব পালনে করবে', বলা হয় বিবৃতিতে।

Comments

The Daily Star  | English

1,500 dead, nearly 20,000 injured in July uprising: Yunus

He announced plans to demand the extradition of deposed dictator Sheikh Hasina from India

54m ago