ফুল ভাসিয়ে পাহাড়ে বর্ষবরণ শুরু

বিজু উৎসব, সাংগ্রাই, সাংলান,
পানিতে ফুল ভাসানোর মাধ্যমে এসব উৎসব শুরু হয়। ছবি: ছবি: লালটানিয়ান পাংখোয়া

পাহাড়ের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব বিজু, বিহু,বিষু, বৈসু, সাংগ্রাই, সাংলান ও চাক্রান। আজ বুধবার পানিতে ফুল ভাসানোর মাধ্যমে এসব উৎসব শুরু হয়।

ডেইলি স্টারের রাঙ্গামাটি সংবাদদাতা জানান, জলদেবতার উদ্দেশ্যে ফুল পূজা করে তারা ফুল ভাসান। এসময় তারা প্রার্থনা করেন পুরনো বছরের সব দুঃখ, কষ্ট, গ্লানি মুছে নতুন বছর যেন সবার জীবনে আশীর্বাদ বয়ে আনে। ১২ তারিখ ফুল বিজু, ১৩ তারিখ মূল বিজু এবং ১৪ তারিখ নতুন বছরকে গজ্জ্যাপজ্জ্যা বলা হয়।

যুগ যুগ ধরে নিজের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে বিভিন্ন রকমের খাবার, খেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে এই উৎসব পালন করা হয়। উৎসবটি পাহাড়ের এক এক সম্প্রদায়ের কাছে আলাদা আলাদা নামে পরিচিত, যেমন- বিজু, বিহু, বিসু, বৈসু, চাংক্রান, সাংগ্রাই এবং সাংলান।

ডেইলি স্টারের বান্দরবান সংবাদদাতা জানিয়েছেন, আজ সকালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শঙ্খ নদীতে ফুল নিবেদনের মাধ্যমে বান্দরবানে চাকমাদের বিঝু, তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু তথা নতুন বর্ষবরণ উৎসব শুরু হয়।

ফুল ভাসিয়ে পাহাড়ে বর্ষবরণ শুরু
পানিতে ফুল ভাসানোর মাধ্যমে এসব উৎসব শুরু হয়। ছবি: ছবি: লালটানিয়ান পাংখোয়া

পঞ্জিকা অনুসারে বছরের শেষ দুদিন ও বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন চাকমারা ফুল বিজু, মূল বিঝু ও গজ্জ্যাপজ্জ্যা এই তিন দিন বিজু পালন করে থাকে। আগামীকাল চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের মূল অনুষ্ঠান। কাল ঘরে ঘরে হরেক রকমের শাক-সবজি ও তরকারির মিশ্রণে 'পাজন' রান্না করে নিমন্ত্রিত ও আগমনী অতিথিদের মাঝে পরিবেশন করা হবে। সবাই ঐতিহ্যবাহী ও নিজস্ব সংস্কৃতির ধারার নতুন কাপড় পরে দলবেঁধে পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়াবে।

নববর্ষের প্রথম দিনকে চাকমারা বলেন গজ্জ্যাপজ্জ্যা। এদিনও মূল বিজুর আমেজ থাকে। মুরুব্বি ও বয়স্কদের নিমন্ত্রণ জানিয়ে ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন করে আর্শীবাদ নেওয়া হয়। এরপর বিহারে ভিক্ষু সংঘকে 'ছোয়াইং' ভোজন দান করা হয়। বিকেলে বাড়িতে পারিবারিক মঙ্গলে ধর্মীয় গুরুদের আমন্ত্রণ করে মঙ্গল সূত্রপাঠ শোনা হয়।

এপ্রিলে তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব হলো- মারমাদের সাংগ্রাই, চাকমাদের বিজু, ত্রিপুরাদের বৈসু, তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু, ম্রোদের চাংক্রান পোয়ে, খুমীদের সাংক্রাই, খেয়াংদের সাংলান, চাকদের সাংগ্রাইং এবং খুমী সম্প্রদায়ের সাংক্রাই। পুরো মাসজুড়ে এসব সম্প্রদায়ের বৈচিত্রময় জীবনধারা, নানা সংস্কৃতির সম্মিলন উৎসবে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।

ফুল ভাসিয়ে পাহাড়ে বর্ষবরণ শুরু
পানিতে ফুল ভাসানোর মাধ্যমে এসব উৎসব শুরু হয়। ছবি: ছবি: লালটানিয়ান পাংখোয়া

সাংগ্রাইং উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শৈটিং মারমা জানান, মাহাঃ সাংগ্রাই পোয়ে  ১৩৮৫ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে সাংগ্রাই র‍্যালি, রিলং পোয়ে, বুদ্ধ বিম্ব স্নান, পাড়ায় পাড়ায় পিঠা তৈরি ইত্যাদি।

বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম জানান, সাংগ্রাই, বিজু, বিষু, বৈসু উৎসব ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে জেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বান্দরবানে সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে দুই স্তর বিশিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। আশা করি সবাই নিরাপদে উৎসব উদযাপন করতে পারবেন।

Comments

The Daily Star  | English

White paper on economy to be submitted on Sunday: Debapriya

The outcomes of the white paper will also be shared with the media on Monday

1h ago