আঞ্চলিক মহাসড়কে ন্যূনতম হারে হলেও টোল আদায় করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আঞ্চলিক মহাসড়কে টোল আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, 'সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে অবকাঠামো নির্মাণ করছে। তাই আঞ্চলিক মহাসড়কে ন্যূনতম হারে হলেও টোল আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে মানুষের মধ্যে টোল দেয়ার সংস্কৃতিও গড়ে উঠবে।'
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন।
সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
মান্নান বলেন, ছোট জায়গায় অনেক বেশি দোকান। তারা গাদাগাদি করে ব্যবসা করছেন। নিশ্চয়ই তারা ইচ্ছা করে সেটি করছে না, আমরা সেটি বুঝি। কিভাবে এর সমাধান হতে পারে-এসব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে আরও বলেন, তিনি প্রত্যেক স্কুলে টয়লেট ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, স্যানিটেশন বিহীন কোন স্কুল চলবে না।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নারীদের কাজের হিসেব নেই। এটা যোগ করলে প্রবৃদ্ধি বাড়বে। নারীরা অনেক অবদান রাখছেন। নারীর কাজের সেই স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ফসলি জমি যতটা সম্ভব এড়ানো যায় তার পরামর্শ দিয়েছেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, হাওরে সড়কের পরিবর্তে উড়াল সড়ক নির্মাণ করার পক্ষে মত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া তিনি এক কোটি পরিবারের মাঝে টিসিবির স্বল্প মূল্যের পণ্যের দ্বিতীয় পর্বের বিতরণ কাজ ঈদের আগে শেষ করার নির্দেশ দেন।
এম এ মান্নান জানান, একনেক সভায় ১১ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৪ হাজার ২৫২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৬৪৫ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক অর্থায়ন থেকে পাওয়া যাবে ৬০৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
অনুমোদিত প্রকল্পসমূহের মধ্যে 'ঢাকা সিএমএইচ এ ক্যানসার সেন্টার নির্মাণ' প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪৬ কোটি টাকা। ঢাকা শহর কাছাকাছি এলাকায় ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প, যার ব্যয় হবে ৭৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।
'ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা নির্মাণ প্রকল্প' বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা। বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প, এর বাস্তবায়ন ব্যয় ২১১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি অ্যাসিসটেন্স প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
জামালপুর জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। ওয়াশ সেক্টর স্ট্রেনথেনিং অ্যান্ড স্যানিটেশন (সানমাকর্স) ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ইন বাংলাদেশ প্রকল্প, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই, স্যানিটেশন এন্ড হাইজিন প্রজেক্ট ইন বাংলাদেশ প্রকল্প, তাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং প্রকল্প, যার ব্যয় হবে ১৯৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এছাড়া 'ভূলতা-আড়াইহাজার-বাঞ্ছারামপুর-নবীনগর-শিবপুর-রাধিকা আঞ্চলিক মহাসড়ক ও সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প এবং সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট' প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সরকার কাজ করবে। তবে বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে আমাদের এটাও ভাবতে হবে যে, আমাদের মধ্যে সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে।
Comments