‘বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রত্যাখানে বাংলাদেশের অবস্থান সমর্থন করে চীন’

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের ফাইল ছবি | ইউএনবি

অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখানের ব্যাপারে বাংলাদেশের যে অবস্থান, চীন তা সমর্থন করে বলে মন্তব্য করেছে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ-চীন সিল্ক রোড ফোরামের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ইয়াও ওয়েন বলেছেন, 'বাংলাদেশের প্রতি চীন সব সময় ধারাবাহিক নীতি বজায় রেখেছে। চীন সব সময় বাংলাদেশের বিশ্বস্ত কৌশলগত অংশীদার। অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখানের ব্যাপারে বাংলাদেশের যে অবস্থান, চীন তা সমর্থন করে।'

গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগ দিয়েছেন ইয়াও ওয়েন। সেই সময় থেকে ২ দেশের সম্পর্কের বিষয়ে বাংলাদেশের নানা স্তরের লোকজনের আন্তরিকতা তাকে মুগ্ধ করেছে। তার মতে, ঢাকা-বেইজিংয়ের সম্পর্কের যে ভবিষ্যৎ আর সম্ভাবনা, সেটা সরকারকে ছাড়িয়ে জনগণের মাঝে বিস্তৃত।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদার প্রতি চীনের সমর্থনের প্রসঙ্গে ইয়াও ওয়েন বলেন, 'চীন সব সময় বাংলাদেশের বিশ্বস্ত কৌশলগত অংশীদার। বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রত্যাখানের যে  অবস্থান মেনে বলে, তার প্রতি চীনের সমর্থন আছে।'

'উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে ২ দেশের স্বার্থ অভিন্ন। ফলে বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের আরও ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের রূপকল্প ২০৪১ ও স্মার্ট বাংলাদেশের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে আমরা সহযোগিতা করতে পারি। ২ দেশ একসঙ্গে বিকশিত হতে পারে', যোগ করেন তিনি।

চীনের রাষ্ট্রদূতকে দেওয়া সিল্ক রুট ফোরামের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক আমীর হোসেন আমু, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান এবং কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, 'অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মত-পার্থক্য থাকলেও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের বিষয়ে এ দেশের রাজনীতিবিদদের মত-পার্থক্য নেই। আজকে মঞ্চে উপস্থিত ৩টি দলের প্রতিনিধিরা সেটার প্রমাণ দিচ্ছেন। তারা সবাই এই সম্পর্কের সমর্থক। চীন বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল এবং জনগণের সঙ্গে সম্পর্কে বিশ্বাসী।'

চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পক পুনঃস্থাপনের বিষয়ে তিনি বলেন, 'এর মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপনের পাশাপাশি বিরোধী যুক্ত দেশগুলো সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে নিতে পারে, সেই দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে সংলাপ ও শান্তির বিজয় হয়েছে।'

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের প্রসঙ্গ টেনে আমীর হোসেন আমু বলেন, 'রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীন জোরালো ভূমিকা রাখলে বাংলাদেশের জনগণ আরও বেশি সন্তুষ্ট হতো। রাশিয়া ও ইউক্রেনের বর্তমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে চীনের সক্রিয় ভূমিকাও প্রত্যাশিত।'

আব্দুল মঈন খান বলেন, 'চীন এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার। এখন পর্যন্ত চীনে যেভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে, সেটা কারও পক্ষের করা সম্ভব নয়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেরও সেটা করার সামর্থ্য নেই।'

সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা হচ্ছে, চীন তাতে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। এটাই বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা।'

আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ-চীন সিল্ক রোড ফোরামের চেয়ারম্যান দিলীপ বড়ুয়া।

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

6h ago