‘আবার জঙ্গি হামলা হলে টনক নড়বে’

দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ২ আসামি মাইনুল হাসান শামীম এবং আবু সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার একটি আদালত প্রাঙ্গণ থেকে ২ জঙ্গিকে ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার ৩ মাসেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এমনকি এখন পর্যন্ত তাদের হদিসও পায়নি পুলিশ।

এই ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত ১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ দিনের বিশেষ অভিযান চালিয়ে প্রায় ২৫ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করে, যাদের বেশিরভাগই ছিল বিএনপির নেতাকর্মী। কিন্তু যে জঙ্গিদের গ্রেপ্তারে এই অভিযান তাদের ধরতে পারেনি।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করতে না পারায় সম্ভাব্য জঙ্গি হামলা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

গত ২০ নভেম্বর জঙ্গিদের একটি দল আদালত চত্বর থেকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মঈনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেলকে। তারা ২ জনই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য।

২০১৫ সালে প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে হত্যার দায়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। একই বছর ব্লগার-লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায়ও সোহেলকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

নিরাপত্তার ফাঁকফোকর ও জঙ্গিদের গ্রেপ্তারে দেরি হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহতদের পরিবার।

দীপনের স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান জলি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মনে হচ্ছে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। সবাই এটা ভুলে গেছে।'

তিনি বলেন, 'কেউ হারিয়ে গেলেও তো তাকে খুঁজে পাওয়া যায়। অথচ, আদালত থেকে ২ জন জঙ্গিকে সিনেমার মতো করে নিয়ে গেল, তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, এটা তো বিশ্বাসযোগ্য না। ধরতে চাইলে কেন ধরতে পারবে না? কোথায় হারবে তারা?'

'তারা তো অনেক বেশি সক্রিয়। কোন দিক থেকে তারা কোথায় আবার হামলা করে বসবে, কে জানে। যখন আবার জঙ্গি হামলা হবে, তখন গিয়ে হয়তো টনক নড়বে', যোগ করেন জলি।

জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনার পর তাদের গ্রেপ্তারে সারা দেশে রেড অ্যালার্ট দেওয়া হয় এবং সীমান্তরক্ষীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়। তাদের গ্রেপ্তারে জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, ওই ২ জঙ্গি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেনি, দেশের ভেতরেই লুকিয়ে আছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আজ বুধবার বলেছেন, 'পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের ধরা যাচ্ছে না, বিষয়টি এমন নয়। আমরা অনেক জঙ্গিকে ধরেছি। অনেক জঙ্গিকে খুঁজে বের করেছি। যারা পালিয়েছে তাদের ধরার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। আমরা তাদের ধরে ফেলব।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Sohag’s murder exposes a society numbed by fear and brutality

It was a murder that stunned the nation, not only for its barbarity, but for what it revealed about the society we have become.

43m ago