শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালের কাজ ৬০ ভাগ সম্পন্ন: বিমান প্রতিমন্ত্রী
বেসামরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেছেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কাজ ইতোমধ্যে ৬০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন টার্মিনাল ভবন এখন দৃশ্যমান।
তিনি বলেন, 'বর্তমানে টার্মিনাল ভবনের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা এবং বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ইন্সটলের কাজ চলছে। এ বছরের অক্টোবরেই তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে।'
আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিমানবন্দরের বর্তমান ১ ও ২ নম্বর টার্মিনালের যাত্রীসেবা ও বিভিন্ন কার্যক্রম এবং তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রীসেবা বৃদ্ধি ও নিরাপদ বিমান পরিচালনা নিশ্চিতে বাংলাদেশের সব বিমানবন্দরে রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধিকরণ, নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা আধুনিকায়নসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। সত্যিকার অর্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এভিয়েশন সেক্টরে উন্নয়নের নীরব বিপ্লব সাধিত হয়েছে।'
প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'বর্তমান টার্মিনালের অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার জন্য যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত মানের সেবা প্রদান করতে না পারলেও সেবার মান উন্নয়নে আমাদের সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টা রয়েছে। বিমানবন্দরের কোথাও যেন কোনো যাত্রীর হয়রানির শিকার হতে না হয় সেজন্য মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ প্রতিনিয়ত বর্তমান টার্মিনালের কার্যক্রম মনিটরিং করছে। তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনের পর অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা দূর হওয়ায় যাত্রীরা আন্তর্জাতিক মানের সেবা পাবেন।'
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রানওয়ের ইন্সট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেমকে (আইএলএস) ক্যাটাগরি-১ থেকে ক্যাটাগরি-২ এ উন্নীতকরণের কাজ চলমান থাকায় বর্তমানে রাতে ৫ ঘণ্টা এই বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ থাকছে। তবে এই কারণে যাতে যাত্রীদের সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা সচেষ্ট রয়েছি। আইএলএস সিস্টেম আপডেটের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ঘন কুয়াশার মধ্যে বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ অবতরণে বর্তমানে যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে তা অনেকাংশেই দূর হবে।'
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব আলী বলেন, 'আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার রুলস ও রেগুলেশনে পরিবর্তন আসায় সেই অনুযায়ী সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজের ডিজাইন পরিবর্তন করার কারণে এই কাজে একটু দেরি হচ্ছে। তবে বর্তমানে ডিজাইন প্রণয়ন সম্পন্ন হয়েছে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা হবে।'
উল্লেখ্য, এর আগে সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বর্তমান (১ ও ২ নম্বর) টার্মিনাল পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী। এসময় তিনি বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন, কাস্টমস হল, চেক-ইন কাউন্টার, ব্যাগেজ এরিয়া, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও গ্রিনচ্যানেল পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে প্রতিমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন ও বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন এবং যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন বিষয়ে জানার চেষ্টা করেন। উপস্থিত যাত্রীরা তাকে জানান, ইমিগ্রেশনে বা লাগেজ পেতে তাদের কোনো সমস্যা হয়নি।
এসময় প্রতিমন্ত্রী বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের বলেন, 'একজন যাত্রী যেন বিমানবন্দরে এসে অনুভব করতে পারে আপনারা তাদের সহায়তার জন্য এখানে কাজ করছেন। যাত্রীরা যাতে কোনোভাবেই কোনো প্রকার হয়রানির সম্মুখীন না হন। বিমানবন্দরে তাদেরকে ভালো সেবা দিতে হবে। বিমানবন্দরের সেবায় যেন তারা গর্ববোধ করেন।'
১ ও ২ নম্বর টার্মিনাল পরিদর্শনের সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'বিমানবন্দরের ই-গেইটগুলো চালু আছে। তবে এর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কিত থাকায় এগুলো শতভাগ চালু করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। অন-অ্যারাইভাল ভিসার বিষয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। ইতোমধ্যেই তারা এ বিষয়ে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।'
বিমানবন্দর পরিদর্শনকালে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মুফিদুর রহমান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Comments