নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা
সুইজারল্যান্ডের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সুইজারল্যান্ডের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি বলেন, 'আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এবং আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।'

সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের পর সরকার সার্চ কমিটির মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে।

তিনি আরও বলেন, 'বিদেশি পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন তদারকি করতে আসবে এবং তারা স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করবে।'

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং এর ওপর এবং এর বাজেটের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল যার ভিত্তি তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত রয়েছে।

তিনি বলেন, এই রাজনৈতিক দলের (আওয়ামী লীগ) জন্ম গণমানুষ থেকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির জন্ম সেনানিবাস থেকে। তিনি আরও বলেন, এই দুই দলের প্রধান প্রথমে অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রাষ্ট্রপতি হন, পরে তারা তাদের রাজনৈতিক দল গঠন করেন।

তিনি বলেন, জনগণের মধ্যে তাদের কোনো ভিত্তি নেই।

জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল। তিনি বলেন, 'জনগণের মধ্যে তাদের কোনো ভিত্তি নেই।'

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে সরকার গঠন করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, গত ১৪ বছরে সরকার দেশের ব্যাপক রূপান্তর ঘটিয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগ ও তার জোটকে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ভোট দেওয়ার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে এবং গণতন্ত্রের বিকাশে কাজ করে।

রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১০ লাখের বেশি মিয়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশের জন্য বোঝা। তিনি সব পশ্চিমা দেশকে মিয়ানমারের নাগরিকদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে সমর্থন প্রসারিত করার আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে কষ্টে ফেলেছে।

'আমরা এই প্রভাব বন্ধ করার চেষ্টা করছি,' তিনি যোগ করেন।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, এই যুদ্ধে কাদের লাভ, শুধু অস্ত্র বিক্রেতারাই লাভবান হচ্ছে। বিশ্বের উচিত অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধ করা।

প্রধানমন্ত্রী দেশে নারীর ক্ষমতায়নের কথাও সংক্ষেপে বর্ণনা করেন।

সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছে এবং তার দেশ মসৃণ উত্তরণে বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।

তিনি বলেন, আমি সবসময় বাংলাদেশের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে থাকব।

তিনি বলেন যে, তিনি দেশের প্রতিটি কোণ পরিদর্শন করেছেন এবং তিনি দেশের উল্লেখযোগ্য এবং চিত্তাকর্ষক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করে মুগ্ধ হয়েছেন।

নাথালি চুয়ার্ড বলেন, বাংলাদেশকে কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

তিনি বলেন, 'আমি আশা করছি যে বাংলাদেশ এই সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আরও এগিয়ে যেতে পারবে।'

তিনি গণতন্ত্রের মান, এর স্থিতিশীলতা এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্কের প্রশংসা করেন।

তিনি দেশের নারীর ক্ষমতায়নের, অগ্রগতিরও ভূয়সী প্রশংসা করেন।

রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে তিনি মনে করেন, তাদের দ্রুত স্বদেশে ফিরে যাওয়া উচিত।

এ সময় অ্যাম্বাসেডর এ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
CSA to be repealed

CSA to be repealed within a week: Nahid Islam

About the election, Nahid said an election based on national consensus will be held after completing all necessary reforms.

3h ago