কম দামে ফুয়েল পাওয়া সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: বেবিচক চেয়ারম্যান

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান।

বৈশ্বিক সংকটে দেশের এভিয়েশন খাত নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান।

তিনি বলেন, 'বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের কথা যদি বলি, মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ফুয়েল। কম দামে ফুয়েল পাওয়াই হচ্ছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতি বছর ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ছে, কাজেই কম দামে ফুয়েল সরবরাহ করা এই মুহূর্তে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ।'

পাশাপাশি বিমানবন্দরে সক্ষমতা বৃদ্ধি, নেভিগেশন, কমিউনিকেশন সিস্টেমের উন্নতকরণও বিরাট চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আজ শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে 'দেশের এভিয়েশন ও পর্যটন খাতের মাধ্যমে বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ' শীর্ষক সেমিনারের মূল প্রবন্ধে বেবিচক চেয়ারম্যান এসব তথ্য তুলে ধরেন।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) আয়োজনে চলমান আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলার অংশ হিসেবে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। আগামীকাল মেলার শেষ দিন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে মফিদুর রহমান বলেন, 'রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুক্ত পরিস্থিতিও অ্যাভিয়েশন খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ ছাড়া, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারাও বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ অ্যাভিয়েশন হচ্ছে প্রযুক্তিনির্ভর খাত।'

মফিদুর রহমান বলেন, 'প্রযুক্তিগত দিক থেকেও আপডেট থাকা জরুরি। যেহেতু দ্রুত নতুন নতুন প্রযুক্তি বদলাচ্ছে, তা না হলে আমরা এগিয়ে যেতে পারব না। এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। বিমানবন্দরে নিরাপত্তাও একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। আমি মনে করি, নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও আগামী দিনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।'

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণসহ বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, দুবাই কীভাবে উন্নত হলো? কীভাবে টুরিস্ট জোনে পরিণত হলো? তারা উন্নত হয়েছে সংযোগের কারণে। এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম খাতে উন্নতির কারণে। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশেরও এ খাতে প্রচুর সম্ভাবনা আছে।'

চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণের উপায় কী? জানতে চাইলে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, 'এ লক্ষ্যে সরকার আমাদের অর্থনৈতিক ও নীতিগত সহায়তা দিয়ে আসছে। পাশাপাশি আমরা নিজেদের ফান্ডের অর্থায়নেও টেকসই এভিয়েশন পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই।'

সেমিনারে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন বলেন, 'ট্যুরিজম ও এভিয়েশন একে অপরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি খাত। আমাদের দেশে এই খাতে বিপুল সম্ভাবনা আছে, এটা নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। আমরা আশা করছি বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হলে আমাদের ফ্লাইট সংখ্যা বাড়বে। সেই সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়নও হবে। কক্সবাজার বিমানবন্দরের উন্নয়নের ফলে সামগ্রিকভাবেই যাতায়াতে একটা অভূতপূর্ব উন্নয়ন হবে। ট্যুরিজম নিয়ে আমাদের মাস্টারপ্ল্যান আছে, সেটা সম্পন্ন হলে আমার আশা যে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে (জিডিপিতে) এ খাত আরও বেশি অবদান রাখবে।'

বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের বলেন, 'দেশে প্রায় ১ হাজারের বেশি পর্যটন স্পট আছে। যার মধ্যে ৫০টি টুরিস্ট গন্তব্য আগামী দিনে আন্তর্জাতিক মানের করে তৈরি করতে পারব। যা দেশের এভিয়েশন খাতকেও প্রভাবিত করবে।'

সেমিনারে ফ্লাইট সেফটি রিজিওনাল অফিসার এস এম নাজমুল আনাম, এশিয়া প্যাসিফিকের আইসিএও উইনিফ্রেড ইয়ং, আইএটিএ'র রিজিওনাল অফিসার ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আটাবের সভাপতি এস এন মঞ্জুর মোর্শেদ মাহবুব, মহাসচিব আব্দুস সালাম আরেফ ও জনসংযোগ সচিব আতিকুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh exports to EU

RMG exports to EU rise by 2.99% in Jan-Nov

In the 11 months, Bangladesh shipped garments worth $18.15 billion, second highest after China

1h ago