শতবর্ষী গড়েয়া মাঠ রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নে শত বছরের পুরোনো গড়েয়া মাঠ রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী।
মাঠ রক্ষার দাবিতে সোমবার টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রায় ২ ঘণ্টা তারা ঠাকুরগাঁও–গড়েয়া সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
বিক্ষোভকারীরা পুলিশি হয়রানি বন্ধ, ভূমি দস্যুদের করা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তার নিরীহ গ্রামবাসীদের মুক্তির দাবি জানান।
তারা বলেন, গ্রামের মানুষ শত বছরের বেশি সময় ধরে খেলার মাঠ হিসেবে ১ দশমিক ৮৪ একর জমি ব্যবহার করে আসছে। গত জুন মাসে হঠাৎ করেই স্থানীয় ফখরুল ইসলাম জুয়েল ও সজল কুমার চৌধুরী জমির মালিকদের উত্তরাধিকারীদের কাছ থেকে মাঠের জমি কিনেছে করেছে বলে দাবি করেন।
চলতি মাসে তারা সন্ত্রাসীদের দিয়ে মাঠটি জোরপূর্বক দখলে নেওয়ার চেষ্টা করলে গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করে।
পরে ওই দুজন স্থানীয় ব্যবসায়ী, শিক্ষক ও সমাজকর্মীসহ শতাধিক মানুষের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা করেন।
গড়েয়া ছোঙ্গাখাতা গ্রামের ষাট বছর বয়সী বৃদ্ধ অতুল চন্দ্র রায় বিক্ষোভে অংশ নেন। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শৈশব থেকে তরুণ বয়স পর্যন্ত এই মাঠে আমরা খেলেছি। আমাদের বাপ-দাদারাও ছোটবেলায় এই মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের গল্প শুনিয়েছেন।'
আরেক বৃদ্ধা বিলাসী রানী (৬৫) ডেইলি স্টারকে জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি এ জায়গাটি খেলার মাঠ হিসেবেই জানেন। এ মাঠে ওয়াজ মাহফিল, হরিসভা, কীর্তনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান এই মাঠেই তারা আয়োজন করে আসছেন ।
গড়েয়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি মোজাহারুল ইসলাম লাবলু বলেন, 'গত একমাসে একদল দুর্বৃত্ত বেশ কয়েকবার এসে মাঠ দখলের চেষ্টা করে। মাঠ দখলে ব্যর্থ হয়ে তারা গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে ৪টি মিথ্যা মামলা করে।'
একটি মামলায় রোববার রাতে স্থানীয় একটি কলেজের এক শিক্ষক ও গড়েয়া বাজারের এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
যোগাযোগ করা হলে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সদর ইউএনওকে নিয়ে ইতোমধ্যে ৩ বার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় প্রবীণরা ছোটবেলা থেকে স্থানটি খেলার মাঠ হিসেবেই দেখে আসছেন। সংকট সমাধানে পুলিশ ও স্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করব।'
জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন ডেইলি স্টারকে জানান, ভাঙচুর মামলায় দুজনকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা স্থানীয় গণ্যমান্যদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করার পরামর্শ দিয়েছি।'
Comments