কপ-২৭ এ একমাত্র আলোচ্য বিষয় হওয়া উচিত ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি: ড. ইউনূস
অবিলম্বে ইউক্রেন যুদ্ধ সমাপ্তির আহ্বান জানিয়ে নোবেল লরিয়েট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, 'কপ-২৭ এর এটিই এখন একমাত্র আলোচ্য বিষয় হওয়া উচিত। যুদ্ধ বিধ্বস্ত পৃথিবী এখন জলবায়ু সংকটের মতো আরও গভীর সমস্যার দিকে মনোযোগ দেওয়ার বদলে যুদ্ধের অব্যবহিত ধ্বংসযজ্ঞের হাত থেকে নিজেকে রক্ষায় বাধ্য হচ্ছে।'
কলম্বিয়ার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ ইউনিভার্সিটি এক্সটারনাডো ডি কলম্বিয়ায় সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে একটি অধিকতর সমতাভিত্তিক বিশ্ব গড়ে তোলার ওপর দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, 'এই যুদ্ধ এরই মধ্যে একটি বিশ্ব যুদ্ধে, এই গ্রহে মানব জাতির বর্তমান ও ভবিষ্যতের মধ্যকার যুদ্ধে পরিণত হয়েছে। এটি শুধু একটি দেশ নয়, এটি সমগ্র মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ।'
১৪ হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে ১৪০ বছরের প্রাচীন এই বিশ্ববিদ্যালয়টি এরই মধ্যে ইউনূস সেন্টারের সঙ্গে যৌথভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি 'ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার' প্রতিষ্ঠা করেছে।
অনুষ্ঠানের মূল কর্মসূচি ছিল নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও কলম্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোসের মধ্যে দারিদ্র বিমোচন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সামাজিক ব্যবসার ভূমিকা শীর্ষক সংলাপ।
ড. ইউনূস ব্যাখ্যা করেন কীভাবে একটি ৩ শূন্যর পৃথিবী, অর্থাৎ শূন্য নীট কার্বন নিঃসরণ, দারিদ্র দূরীকরণের লক্ষ্যে শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ এবং সকলের মধ্যকার উদ্যোক্তা শক্তি অবারিত করার মাধ্যমে শূন্য বেকারত্বের একটি পৃথিবী সৃষ্টি করা সম্ভব, যার মূল চালিকাশক্তি হবে তরুণ সমাজ।
প্রেসিডেন্ট সাস্তোস তার সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, তরুণরাই এ ধরনের একটি পৃথিবী গড়ে তোলায় মূল ভূমিকা পালন করতে পারে এবং তিনি তার ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমাজনিয়া অঞ্চল ও অন্যান্য এলাকায় ইউনূস এনভায়রনমেন্টাল হাবসহ তরুণদের অন্যান্য সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগকে সহায়তা করছেন।
তাদের মধ্যকার এই ঘণ্টাব্যাপী আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল একটি অধিকতর সমতাভিত্তিক পৃথিবী সৃষ্টির পূর্বশর্ত হিসেবে দারিদ্র দূরীকরণ, তরুণ উদ্যোক্তা ও সামাজিক ব্যবসা সৃষ্টি, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, অবিলম্বে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি ও শান্তি প্রতিষ্ঠা।
অনুষ্ঠানে প্রায় ১ হাজার মানুষ অংশ নেন, যাদের মধ্যে ছিলেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, কূটনীতিক, জাতিসংঘ কর্মকর্তা, উদ্যোক্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।
এ ছাড়া, ড. ইউনূস ও বোগোটার মেয়র ক্লডিয়া লোপেজের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যার বিষয়বস্তু ছিল বোগোটা ও অন্যান্য নগরীগুলোকে কীভাবে ৩ শূন্যর নগরীতে পরিণত করা যায়।
Comments