যুবলীগের মহাসমাবেশ: রাজধানীতে বাস সংকট

সমাবেশের কারণে কিছু এলাকায় যান চলাচল বন্ধও রয়েছে। ছবি: পলাশ খান/স্টার

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাস সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের মহাসমাবেশ শুরু হয়। এর মধ্যে আজ সকাল থেকেই রাজধানীতে বাস সংকট দেখা গেছে।

সরেজমিনে এয়ারপোর্ট রোড, উত্তরা, বনানী, এলিফ্যান্ট রোড, শাহবাগ, গুলিস্তান, মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় যাত্রীদের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, যুবলীগের সমাবেশে যোগদানের লক্ষ্যে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা বাস রিজার্ভ নিয়ে নেওয়ায় গণপরিবহন সংকট তৈরি হয়েছে।

মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও অন্যান্য এলাকায় থেকে যুবলীগের নেতা-কর্মীদের পিক-আপ ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।

বাস সংকটে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নারী ও বয়স্করা। বাস না থাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশাচালকরাও বেশি ভাড়া নিচ্ছেন।

অসুস্থ স্বজনকে দেখতে মিরপুর ১০ বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাবেন ৬০ বছর বয়সী রহমান মিয়া। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাপ্তাহিক ছুটির এ দিনে সহজেই বাস পাওয়া গেলেও আজ ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করেও কোনো বাস পাচ্ছি না।'

'যাও অনেক সময় পর একটি বাস আসে, সেখানে এত ভিড় থাকে যে ওঠাই যায় না', বলেন তিনি।

মিরপুর থেকে হামিদুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এদেশে যাই ঘটুক না কেন, সাধারণ মানুষই ভুক্তভোগী। সাধারণত বাসে করেই আমি কারওয়ান বাজার যাই। কিন্তু, আজ আমি কী করব? মনে হচ্ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে যেতে হবে। এতে খরচ হবে বাসের চেয়ে ১০ গুণ বেশি।'

আজ রাইড শেয়ারিংও ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান আব্দুর রব। তিনি বলেন, 'পাঠাওয়ের রাইড নেওয়ার জন্য ৩০ মিনিট ধরে অপেক্ষা করছি। কিন্তু এখনো কাউকে পাইনি।'

নারায়ণগঞ্জ থেকে এসে পল্টনে নেমেছেন আলাউদ্দিন, যাবেন বাটা সিগনাল এলাকায়। তিনি বলেন, 'আমার হাতের ২ ব্যাগের ওজন প্রায় ১০ কেজি। যানবাহন না পাওয়ায় ব্যাগ নিয়ে হেঁটেই রওনা দিয়েছি।'

পল্টনেই কথা হয় বারডেম হাসপাতালের ২ নার্স লাভলী আক্তার ও লাকী আক্তারের সঙ্গে। তারা জানান, বাস না পেয়ে হেঁটেই পল্টন থেকে বারডেমের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার এনায়েতুল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুক্রবারে যাত্রী কম থাকায় এমনিতেই বাস কম থাকে। এর সঙ্গে যুবলীগের সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই।'

যুবলীগের নেতা-কর্মীরা বাস রিজার্ভ নিয়েছেন কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'কিছু বাস হয়তো তারা রিজার্ভ নিয়েছেন।'

অন্যদিকে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে এয়ারপোর্ট সড়ক ও বাবুবাজার থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত বেশ যানজট রয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, যুবলীগের মহাসমাবেশের কারণে বাস নিয়ে নেতা-কর্মীরা শহরে প্রবেশ করায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

এয়ারপোর্ট রোড থেকে ব্যবসায়ী তানভীর আলম বলেন, 'গাজীপুর-ঢাকা মহাসড়কে বেশ ধীরগতিতে যানবাহন চলছে। চেরাগ আলী থেকে উত্তরা মাত্র ৬ কিলোমিটার পথ যেতে ১ ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে।'

মোটরসাইকেলচালক সাইফুল ইসলাম জানান, মহাখালী থেকে গুলিস্তানে যেতে ১ ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। সাধারণত শুক্রবার এ পথ যেতে ২০ মিনিটের মতো সময় লাগে।

২ ঘণ্টায় মিরপুর থেকে উত্তরায় গিয়েছেন মো. মোহন। তিনি জানান, যানজট থাকার কারণে এটুকু পথ পাড়ি দিতে এত সময় লেগেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Postgrad doctors block Shahbagh demanding stipend hike

The blockade resulted in halt of traffic movement, causing huge suffering to commuters

2h ago