‘দেশের ৯৯ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানির আওতায়’

প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৬ অর্জনের লক্ষ্যে টেকসই প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও এর প্রয়োগ, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে মানবসম্পদ উন্নয়ন, পরিবেশবান্ধব উন্নত টয়লেট নির্মাণ ও ব্যবহার এবং স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিসহ নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

তিনি আগামীকাল জাতীয় স্যানিটেশন মাস অক্টোবর ২০২২ এবং বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস ২০২২ উপলক্ষে আজ শুক্রবার দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও 'জাতীয় স্যানিটেশন মাস অক্টোবর ২০২২' এবং 'বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস' উদযাপন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে তিনি আন্তরিক অভিনন্দন জানান। এছাড়াও এবারের প্রতিপাদ্য 'হাতের পরিচ্ছন্নতায় এসে সবে এক হই' যথার্থ হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সকলের জন্য উন্নয়ন' এই নীতিকে ধারণ করে স্যানিটেশন খাতের বিভিন্ন অংশীজনদের সহযোগিতায় টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বা এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা সফল হবো মর্মে আমি আশাবাদী। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও অন্যান্য নানাবিধ রোগব্যাধি থেকে সুরক্ষায় ও এর বিস্তার রোধের সবচেয়ে সহজ, সাশ্রয়ী ও কার্যকর উপায়গুলোর একটি সাবান ও পানি দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়া এবং নিরাপদ স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়গুলো সঠিকভাবে মেনে চলা। আমাদের সময়োপযোগী কার্যক্রমের ফলে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি এ রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৬.২ এ লক্ষ্য অর্জনে জাতিসংঘ নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনাকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছে।' 

তিনি বলেন, 'আমাদের সরকার দেশের সবার জন্য নিরাপদ স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা গ্রামীণ ও পৌর জনপদে নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে গত সাড়ে ১৩ বছরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। যার ফলে বর্তমানে স্যানিটেশনের জাতীয় কাভারেজ ৯৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি অনিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের অভাবজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে।' 

বর্তমানে দেশের প্রায় ৯৯ শতাংশ মানুষকে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন এবং নিরাপদ পানির উৎসের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৩ সালে যা ছিল মাত্র ৩৩ শতাংশ। অপরদিকে খোলাস্থানে মল ত্যাগকারীর হার ২০০৩ সালের ৪৪ শতাংশ থেকে প্রায় শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশের এ সাফল্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত হয়েছে। দেশের সব জেলায় পানি পরীক্ষাগার স্থাপনসহ পানি, স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক অনেক প্রকল্প চলমান আছে যা বাস্তবায়ন হলে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে। 

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য সেফলি ম্যানেজড স্যানিটেশন ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে 'জাতীয় স্যানিটেশন মাস' এবং 'বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস' যথাযথভাবে পালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

তিনি আশা প্রকাশ করেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে জনসচেতনতামূলক এ আয়োজন সবার জন্য স্যানিটেশন নিশ্চিত করে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে। এ সামাজিক আন্দোলনকে আরও বেগবান করে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসমূহ অর্জনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও গণমাধ্যমসহ দেশের প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। 

প্রধানমন্ত্রী 'জাতীয় স্যানিটেশন মাস অক্টোবর ২০২২' এবং 'বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস ২০২২' উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

16h ago