টাঙ্গাইল

বিক্ষোভের মুখে বিন্দুবাসিনী স্কুলের সীমানা প্রাচীর ভাঙার সিদ্ধান্ত স্থগিত

বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ভাঙার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রোববার বিদ্যালয়ের সামনে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পৌরসভার রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ভাঙার সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। 

বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ভাঙার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রোববার বিদ্যালয়ের সামনে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন এবং শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

পরে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের এক মতবিনিময় সভায় আপাতত সীমানা প্রাচীর ভাঙা হচ্ছে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

সভার সুপারিশ অনুযায়ী, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, সাবেক শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে আলাপ-আলোচনা সাপেক্ষে এবং আবার পরিমাপ করে রাস্তা সম্প্রসারণ ও বিদ্যালয়ের দেওয়াল ভাঙার বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে। 

যানজট নিরসন ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে টাঙ্গাইল পৌর কর্তৃপক্ষ জেলা শহরের অন্যতম প্রধান সড়ক ৪ লেনের কাজী নজরুল সড়কটি ৪ লেনে রূপান্তরের উদ্যোগ নেয়। 

এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সহকারী কমিশনারের (ভূমি) উপস্থিতিতে জমি পরিমাপ করে বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের সীমানা প্রাচীরের ভেতরে ৬-১০ ফুট জায়গা পৌরসভার বলে চিহ্নিত করা হয়।

পৌর কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের ভেতর টিনের বেড়া নির্মাণ করেছে। ছবি: মির্জা শাকিল/স্টার

পরে পৌর কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে 'দখলীকৃত' জায়গায় ৫ ফুট জমি রাস্তার জন্য ছেড়ে দিতে অনুরোধ করে এবং সীমানা প্রাচীর ভেঙে দিয়ে পরে তা আবার পৌরসভার খরচে নির্মাণ করে দেওয়ার আশ্বাস দেয়।

তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর এ কাজ করতে পৌর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে।

এদিকে, প্রিয় বিদ্যালয়ের দেওয়াল ভেঙে ফেলা হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা এর বিরুদ্ধে শনিবার রাত থেকে বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। 

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাম্য রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শহরের উন্নয়নে রাস্তা সম্প্রসারণ হোক এটা আমরাও চাই। তবে এজন্য ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ভাঙার আবশ্যকতা আছে বলে মনে করি না।' 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল করিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ের জায়গা রক্ষা করা আমার দায়িত্ব। সহকারী কমিশনার (ভূমি) সার্ভেয়ার দিয়ে জমি পরিমাপ করে যাওয়ার পর কোনো প্রতিবেদন দাখিল না করলেও, ইতোমধ্যে পৌর কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের ভেতর টিনের বেড়া নির্মাণ করেছে।'

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক খান আলমগীর দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, পরিমাপে বিদ্যালয়ের ভেতরে পৌরসভার প্রায় ১০ ফুট জায়গা পাওয়া গেছে। তবে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টির গেট ও কোনো স্থাপনা বা খেলার মাঠের যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সেজন্য ৫ ফুট জায়গা রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গণি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাস্তা সম্প্রসারণ কাজে পৌরসভার জায়গা উদ্ধারে সহায়তা করছে জেলা প্রশাসন। বিন্দুবাসিনী স্কুলের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হিসাবে এবং পৌরসভার একজন তদারককারী হিসেবে আমি নিজে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পৌর মেয়রকে নিয়ে আলোচনা করেছি।'

'ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনা করে রাস্তা সম্প্রসারণের যেমন প্রয়োজন আছে, তেমনি এটি করতে গিয়ে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের গেইট বা অন্য কিছু যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটিও ভাবা হয়েছে,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Mirza Abbas accuses 'a party' of taking 'hadia' from Bashundhara, City Group, others

Mirza Abbas also BNP cannot be removed from public sentiment through "conspiracy"

2h ago