সিলেট-২: নির্বাচন করবেন না জাপার লামা, মনোনয়ন পেলেন ইয়াহইয়া
সিলেট-২ আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনয়ন পেয়েও অসুস্থতার কারণে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য মকসুদ ইবনে আজিজ লামা।
তার পরিবর্তে এই আসনের আরেক সাবেক সংসদ সদস্য ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
নির্বাচনে অংশ না নেয়ার বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন মকসুদ ইবনে আজিজ লামা এবং মনোনয়ন প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইয়াহইয়া চৌধুরী।
সোমবার বিকেলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্ন সিলেট বিভাগের ১৯ আসনের মধ্যে ১৫টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেন।
ঘোষণার পর কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মকসুদ ইবনে আজিজ লামার মনোনয়ন ও ইয়াহইয়া চৌধুরীর মনোনয়নবঞ্চিত থাকার বিষয়টি আলোচনায় আসে।
তবে সেদিনই রাত সোয়া ১০টার দিকে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের সাক্ষরিত দলীয় মনোনয়নপত্র পোস্ট করেন ইয়াহইয়া চৌধুরী।
সিলেটের বিশ্বনাথ ও বালাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-২ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে কে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তা নিয়ে শুরু হয় নানা গুঞ্জন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিলেট-২ আসনে মকসুদ ইবনে আজিজ লামাকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন দেওয়া হলেও, এই আসন থেকে ইয়াহইয়া চৌধুরী জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।'
যোগাযোগ করা হলে মকসুদ ইবনে আজিজ লামা এ প্রতিবেদককে জানান তিনি অসুস্থতাজনিত কারণে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'আমার উপস্থিতিতেই দলের মহাসচিব প্রার্থী হিসেবে আমার নাম ঘোষণা করেছেন। কিন্তু আমি শারীরিকভাবে বেশ অসুস্থ এবং এতবড় নির্বাচনী আসনে প্রচারণা চালানো আমার পক্ষে অসম্ভব বিবেচনা করে আমি নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত দলকে জানিয়ে দিই। আমি ছাড়াও আরও তিন জন প্রার্থী এ আসনের জন্য মনোনয়ন চেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে থেকে কাউকে দেয়ার অনুরোধ জানাই।'
ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রাথমিকভাবে একটু ভুলবশত মকসুদ ইবনে আজিজ লামাকে মনোনয়ন দেয়ার ব্যাপারটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আধ ঘন্টার মধ্যেই আমাকে এ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানিয়ে রাতেই আমাকে চেয়ারম্যানের সাক্ষরিত মনোনয়নপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। আমিই এ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি।'
২০১৩ সালের জাতীয় নির্বাচনে ইয়াহইয়া চৌধুরী সিলেট-২ আসন থেকে প্রথমবারের মতো জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ আসনটি আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহইয়া চৌধুরী।
পরে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। তবে এবার গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খানের কাছে পরাজিত হন এবং তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।
গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি নির্বাচনের সময়ও তিনি সমালোচনায় আসেন দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট চেয়ে। এ ঘটনার পর তাকে জাতীয় পার্টি থেকে বরখাস্ত করা হয়। যদিও পরবর্তীতে তিনি তার পদ ফেরত পান।
এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোননয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী।
Comments