‘সিটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ’
সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলেও গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ থাকছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় এমনটি হয়েছে। আজ সোমবার গাজীপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ সরকার।
অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, একজন প্রার্থীর কী যোগ্যতা আছে সেই তথ্য একজন ভোটারের জানা উচিত। এই তথ্য ভোটারকে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই করতে সহায়তা করে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে অবশ্যই জবাবদিহি, যোগ্যতা, স্বচ্ছতা এবং জন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হয়। প্রার্থীর মধ্যে জবাবদিহির গুণ আছে, স্বচ্ছতা আছে, কিন্তু সেবা দেওয়ার যোগ্যতা আছে কি না সেগুলো ভোটারদের জানতে হবে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে পাঁচ জন স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী। তাদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহানুর ইসলাম ও হারুন অর রশিদ।
স্বতন্ত্র নারী মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন স্বশিক্ষিত এবং জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী মো. রাজু আহমেদ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে ৯২ জন মাধ্যমিক পাস করেননি। স্নাতকোত্তর রয়েছেন ২১ জন। সংরক্ষিত মোট ৭৯ জন নারী কাউন্সিলরের মধ্যে ৪০ জন মাধ্যমিক পাশ করেননি। স্নাতকোত্তর রয়েছেন ৮ জন।
মেয়র এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের বেশিরভাগের পেশা ব্যবসা। মেয়র পদে তিন জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৯২ জন পেশা হিসেবে ব্যবসা উল্লেখ করেছেন। সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৭৯ জনের মধ্যে ৩৯ জন গৃহিণী।
সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ সরকার বলেন, নির্বাহী বিভাগের দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা করা। নির্বাচন কমিশন এক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করবে। অতীতেও নির্বাচনের ব্যাপারে অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। কেউ প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি করছে এমন ঘটনা আমরা দেখতে চাই না। নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নির্বাহী বিভাগকে কাজে লাগানোর জন্য। ইসি প্রয়োজনে নির্বাহী বিভাগের লোকদেরকে বাধ্য করতে পারে।
দিলীপ সরকার আরও বলেন, সব দলের অংশগ্রহণে একটি প্রতিদ্বন্দিতামূলক নির্বাচনের যে প্রত্যাশা আমাদের ছিল তা পূরণ না হলেও যে সকল দল ও প্রার্থী এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তারা সকলেই যেন নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের কাছে সম-সুযোগ পান। নির্বাচনে যেন একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দৃশ্যমান হয়।
সুজনের জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আমজাদ হোসেনের সভাপতিতে সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
Comments