সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে ঢাকায়
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, রোববারের নির্বাচনে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে কম, মাত্র ২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।
সর্বনিম্ন ভোট পড়েছে ঢাকা-১৫ আসনে- মাত্র ১৩ শতাংশ। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার মোট ভোটারের মাত্র ১০ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তিনি এই আসনটিতে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৫০৭ ভোটের মধ্যে ৩৯ হাজার ৬৩২ ভোট পেয়েছেন।
গুলশানের মতো অভিজাত এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসনে ১৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। দ্য ডেইলি স্টারের প্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শেষের দিকে উপ-নির্বাচনে আরও কম ভোট পেয়ে আসনটি জিতেছিলেন এম এ আরাফাত। তিনি এলাকার মোট ভোটারের (৩,২৩,৯৩২) মাত্র ১৫ শতাংশ (৪৮,০৪৯) ভোট পেয়েছিলেন।
তৃতীয় সর্বনিম্ন ভোট পড়েছে ঢাকা-৮ আসনে, ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। মাদারীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এই আসনে পেয়েছেন মাত্র ১৭ শতাংশ (৪৬,৬১০) ভোট।
মোট ১৪১টি আসনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের গড় ভোট হার ৪১.৯৯ শতাংশের চেয়ে কম ভোট পড়েছে।
এর মধ্যে ৫০টির বেশি আসনে ৩০ শতাংশের কম ভোট পড়েছে।
যেসব জেলা বহুবছর ধরে বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ বিরোধীদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত, সেগুলো ভোটদানের দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে ছিল।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার পর বিএনপির ঐতিহ্যবাহী ঘাঁটি লক্ষ্মীপুরে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে, যেখানে মাত্র ২৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।
একইভাবে, বিএনপি ও জাপার শক্ত ঘাঁটি বগুড়া ও কুড়িগ্রামে ৩০ শতাংশ ভোটার ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ, যা একসময় বিএনপির শক্ত ঘাঁটি ছিল, কিন্তু বর্তমানে যেখানে জামায়াতে ইসলামীর শক্ত অবস্থান রয়েছে, সেখানে ৩৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।
ক্ষমতাসীন দল আসনবণ্টন চুক্তির অংশ হিসেবে নিজেদের প্রার্থী সরিয়ে জাপাকে গাইবান্ধা-১ ও গাইবান্ধা-২ ছেড়ে দেয় । এই দুটি আসনে যথাক্রমে ৩০ শতাংশ এবং ৩৪ শতাংশ ভোট পড়েছে।
সেই তুলনায় গাইবান্ধার পার্শ্ববর্তী আসনগুলোতে ভোট পড়েছে ৫৪ শতাংশ।
জাপার জন্য ছেড়ে দেওয়া অন্যান্য আসনগুলোতেও একই অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে।
এগুলোর মধ্যে পটুয়াখালী-১ আসন একটি। পার্শ্ববর্তী পটুয়াখালী-২ আসনে ৪৫ শতাংশ ভোট পড়লেও পটুয়াখালী-১ আসনে ভোট পড়েছে মাত্র ২৪ শতাংশ।
এরকম আরও দুটি আসন হলো ময়মনসিংহ-৫ এবং ময়মনসিংহ-৮। যেখানে জাপা প্রার্থীদের জন্য আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সরিয়ে নেওয়া হয়। এই দুটি আসনে ২৬-২৭ শতাংশ ভোট পড়েছে।
তবে একসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জেলা ফেনীতে ৫১ শতাংশ ভোট পড়েছে।
অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটিগুলোতে।
গোপালগঞ্জে ৭৭ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আসন গোপালগঞ্জ-৩-এ সর্বোচ্চ ৮৭ শতাংশ ভোট পড়েছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে গোপালগঞ্জ-২ আসনে, যেখানে শেখ সেলিম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছেন।
একই অবস্থা বাগেরহাটেও দেখা গেছে, যেখানে দুটি আসনে শেখ পরিবারের সদস্য হেলাল ও তন্ময়ের আধিপত্য রয়েছে। জেলায় ভোট পড়েছে ৬৩ শতাংশ।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, ঐতিহাসিকভাবে আওয়ামী লীগের এলাকা হিসেবে পরিচিত মাদারীপুর, ফরিদপুর, নড়াইল, শরীয়তপুর ও ভোলাতেও ৫৩ থেকে ৫৭ শতাংশ ভোট পড়েছে।
Comments