‘যারা বিরুদ্ধে থাকবে, নির্বাচনের পর তাদের ভাতা বন্ধের’ হুমকি আ. লীগ নেতার
গত ১৫ বছর ধরে যারা সরকারের বিভিন্ন ভাতা ভোগ করে আসছেন, নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে গেলে নির্বাচনের পর তাদের ভাতা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন জামালপুর সদর উপজেলার এক আওয়ামী লীগ নেতা।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আওয়ামী লীগের বিজয় মিছিল শেষে এক সভায় আসন্ন সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের পক্ষে ভোট চান উপজেলার লক্ষীরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাতেম আলী।
এ সময় তিনি বলেন, 'নৌকার সুবিধা ভোগ করবেন। আর এই ১০ দিনের জন্য অন্যের লেবেনচুস খাবেন। আমরা আপনাদের লেবেনচুস খেতে দেবো না।'
তিনি বলেন, 'যারা ১০-২০ দিন লেবেনচুস খাবেন, তারা ৫ বছর লেবেনচুস থেকে বঞ্চিত হবেন। কথাটা মনে রাখবেন।'
তিনি আরও বলেন, 'যারা এই ১৫ বছরে চেয়ারম্যান-মেম্বারের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাতার অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, তারা ভাতা ভোগ করছেন। অতি শিগগির চেয়ারম্যান সাহেব আপনাদের আহ্বান করবেন প্রাইমারি স্কুলের মাঠে। আপনারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেখানে উপস্থিত হবেন। আর যদি উপস্থিত না হন ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে আমরা নির্বাচনের পর যারা বিরুদ্ধে থাকবেন, সকল ভাতাই কাটা পড়ে যাবে।'
হাতেম আলীর এই বক্তব্যের ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে গেছে।
ভিডিওতে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে উদ্দেশ্য করে তাকে বলতে শোনা যায়, 'আমাদের মধ্যে শান্তি নষ্ট করবেন না। যদি শান্তি নষ্ট করেন তাহলে আপনাদের অবস্থাও বিএনপির মতো হবে।'
এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে লক্ষীরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাতেম আলী তারাকে ফোন করা হলে, তিনি রিসিভ করেননি।
এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রেজাউল করিম রেজনুর কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে তারা এমন বক্তব্য রাখেন বলে জানা গেছে।
সে সময় ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে মনিরুজ্জামান মনির ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি মিছিলে উপস্থিত ছিলাম। তবে মিছিল শেষে কে কী বলেছে শুনি নাই।'
আওয়ামী লীগ নেতা হাতেমের বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য জানতে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রেজনুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হাতেম তারা যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নিন্দা পাওয়ার মতো, মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করার মতো। আওয়ামী লীগ কখনো এই আদর্শ ধারণ করে না। তার বক্তব্য ভোটারদের নিরুৎসাহিত করবে।'
Comments