ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আবার বাস ডাকাতি, নারীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বাস ডাকাতি
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আবার বাস ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হয়ে ভোর ৫টা পর্যন্ত চলা ডাকাতির ঘটনায় যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। লুটপাট চলাকালে বাসের নারী যাত্রীদের যৌন হয়রানির ঘটনাও ঘটে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন।

এই ঘটনায় বাসের এক যাত্রী রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মিনু মিয়া টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার বিবরণীতে তিনি উল্লেখ করেন, বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে তিনি সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে রংপুরগামী আল ইমরান পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে যাত্রা শুরু করার সময় তিনিসহ মোট ১০জন যাত্রী বাসে ছিলেন। যাত্রা শুরুর পর থেকেই লোকাল বাসটি পথের বিভিন্ন স্থান হতে যাত্রী ওঠানো শুরু করে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে যানজটে আটকা পড়লে জামগড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আরও ৭-৮জন যাত্রী তোলা হয়।

সবশেষ বাইপাইল এলাকা থেকে আরও ৮-১০ যাত্রী বাসে তোলা হয়। আনুমানিক ৪০-৪৫জন যাত্রী নিয়ে রাত সাড়ে ১১টায় বাসটি গাজীপুরের শ্রীপুর থানার ময়লার ভাগাড় এলাকায় পৌঁছালে যাত্রীবেশী ৮/১০জন ডাকাত ছুরি ও চাপাতি নিয়ে বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ডাকাতদের মধ্যে একজন বাসের চালকের আসনে বসে এবং চালককে হাত-পা বেঁধে বাসের পেছনের দিকে নিয়ে যায়।

পরে রাত সোয়া ১২টার দিকে বাসটি টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় পৌঁছালে ডাকাতরা বাসের যাত্রীদের হাত ও মুখ বেঁধে ফেলে। পরে বাসটি যমুনা সেতুর পূর্ব গোল চত্বর থেকে ইউ টার্ন করিয়ে ঢাকার দিকে রওনা হয়। 

এ সময় তারা মহাসড়কে কয়েক ঘণ্টা গাড়িটি চালাতে থাকে এবং যাত্রীদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়। এ সময় ডাকাতরা বাসের ২-৩ জন নারী যাত্রীকে যৌন হয়রানি করে। পরে ডাকাতরা বিভিন্ন স্থানে গাড়ি থামিয়ে ২-৩ জন করে নেমে যায়। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার শীবপুর এলাকায় বাস থামিয়ে লুটের মালামাল নিয়ে ডাকাতদলের বাকি সদস্যরা নেমে যায়।

পরে স্থানীয়রা এসে তাদের উদ্ধার করে এবং জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করে পুলিশকে ঘটনাটি জানালে টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বাসসহ যাত্রী ও স্টাফদের সদর থানায় নিয়ে যায়।

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর আহম্মেদ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, থানায় পৌঁছানোর পর জেলার সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারা এসে বাসের যাত্রী ও স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, জেলা পুলিশের কয়েকটি দল ইতোমধ্যে ডাকাতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে করতে কাজ শুরু করেছে।

তিনি বলেন, 'ডাকাতির পর ডাকাতরা যেহেতু বিভিন্ন এলাকায় গা ঢাকা দেয়, সেহেতু তাদের ধরতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।'

এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এই মহাসড়কে ইউনিক রয়্যালসের একটি বাস ছিনতাই এবং নারী যাত্রীদের যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে। ২০২২ সালের ২ আগস্ট কুষ্টিয়াগামী একটি বাসে একই রকম ডাকাতি এবং যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে।

Comments

The Daily Star  | English

Consensus commission: Fresh caretaker models on the table now

The National Consensus Commission, BNP, and Bangladesh Jamaat-e-Islami have each proposed separate methods for appointing the chief adviser to caretaker government.

8h ago