ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে একাধিক শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ
গতকাল রাতে ফজলুল হক মুসলিম হলে গণপিটুনিতে তোফাজ্জল হোসেনের (৩৫) মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটি প্রাথমিকভাবে এই অপরাধের সঙ্গে একাধিক শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ পেয়েছে।
কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেই তদন্ত কমিটি ঢাবি প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
এর আগে অধ্যাপক আলমগীর কবিরের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে হল কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানান, 'আমরা গতকাল রাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। প্রাথমিকভাবে আমরা এই ঘটনার সঙ্গে একাধিক শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছি। কমিটির সদস্য এক অধ্যাপক জানান, পুলিশ ইতোমধ্যে যে ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে, তাদের নামও রয়েছে এই প্রতিবেদনে।
'আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আরও বিস্তৃত আকারে তদন্ত চালানোর পরামর্শ দিয়েছি', যোগ করেন তিনি।
বাকি সদস্যরাও এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন।
গতকাল রাতে পুলিশ ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন মো. জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হুসাইন সাজ্জাদ, আহসানউল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম
ছাত্রলীগের সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল মিয়া জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আগে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন।
অভিযোগ মতে, তোফাজ্জলকে ফজলুল হক মুসলিম হলের একদল শিক্ষার্থী পিটিয়ে হত্যা করে।
বুধবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা তোফাজ্জলকে মোবাইল চোর সন্দেহে হলের ভেতর আটকে রেখে মারধর করে। দ্য ডেইলি স্টারের ঢাবি প্রতিনিধি ফজলুল হোক মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহ মোহাম্মদ মাসুমের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানান।
হল কর্তৃপক্ষ তোফাজ্জলকে প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিমের কাছে হস্তান্তর করার পর টিমের সদস্যরা তোফাজ্জলকে হাসপাতালের পরিবর্তে প্রথমে শাহবাগ থানায় নিয়ে যান। এরপর পুলিশের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে তোফাজ্জলকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
তোফাজ্জলকে হলের ভেতর আটকে রেখে কয়েক দফা মারধর করা হয়। এর মাঝে তাকে রাতের খাবারও খেতে দেওয়া হয়। এই ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
Comments