অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে গ্রেপ্তার ২ জনের মৃত্যু, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনের অভিযোগ

অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে গ্রেপ্তার ২ জনের মৃত্যু, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনের অভিযোগ
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাঘাটা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন | ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার সাঘাটায় উপজেলায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের পর দুইজন মারা গেছেন। পুলিশের দাবি, অসুস্থ হয়ে তারা মারা গেছেন।

তবে স্বজনের অভিযোগ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতনে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

নিহতরা হলেন, সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়নের গোবিন্দী গ্রামের মৃত রোস্তম আলীর ছেলে সোহরাব হোসেন আপেল (৩৫) ও মৃত মালেক উদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৫)।

এছাড়া আরও তিনজন গাইবান্ধা ও বগুড়ার দুইটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গতকাল সোমবার গভীর রাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই অভিযান পরিচালনা করে।

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, 'অস্ত্র উদ্ধারে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পরে অসুস্থ বোধ (চিৎকার-চেঁচামেচি) করলে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে একজন বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও একজন গাইবান্ধা জেনারাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।'

নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন কি না জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, 'এই বিষয়ে ডাক্তার ভালো বলতে পারবেন।'

ছবি: সংগৃহীত

নিহতদের মধ্যে সোহরাব হোসেন আপেল আজ দুপুর ২টার দিকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। শফিকুল ইসলামের আজ সকালে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) চিকিৎসাধীন   অবস্থায় মৃত্যু হয়।

গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মাহবুব হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, আরও দুইজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।

আপেলের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল কি না জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন বলেন, 'আজকে ময়নাতদন্ত করা সম্ভব হয়নি। আগামীকাল করার পরে বলা যাবে।'

সোহরাব হোসেনের স্ত্রী স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, 'গতকাল রাত ১২টার দিকে যৌথ বাহিনী আমাদের গ্রামে এসে আমার স্বামীসহ পাঁচজনকে আটক করে নির্যাতন করতে থাকে। তাদের অভিযোগ, আমার স্বামীর কাছে নাকি অস্ত্র আছে। আমি বলেছি, আল্লাহর দোহায় আমার স্বামীর কাছে কোনো অস্ত্র নেই। রাত ১২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত তারা এখানে অবস্থান করে। বড় বড় লাঠি ছিল তাদের কাছে। আমাদেরকে তারা আলাদা রাখে। স্বামীর কাছে যেতে দেয়নি। তাদের নির্যাতনেই আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। আমি তার বিচার চাই।'

নিহতদের স্বজনরা জানান, গত রাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা সদর ইউনিয়নের গোবিন্দী গ্রামের মৃত আবদুল গনি সরকারের ছেলে সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন ওরফে সুইটসহ (৫৫) পাঁচজনকে তুলে নিয়ে যায়।

আহতদের মধ্যে রিয়াজুল ইসলাম বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মোশারফ হোসেন ও শাহাদত হোসেন গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, 'কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়েছে যে, আমাদের কাছে অস্ত্র আছে। গতকাল রাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গিয়ে অস্ত্র খুঁজে না পেয়ে সারারাত আমিসহ আমার ভাতিজা, কাজের ছেলে, ড্রাইভারকে ব্যাপক মারধর করে।'

Comments

The Daily Star  | English

BNP not in favour of banning any political party: Fakhrul

'Who are we to ban a political party? The people will decide,' says the BNP leader

45m ago