আ. লীগ নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল চেয়ে রিট সরাসরি খারিজ

রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা এবং জুলাই ও আগস্টে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় নির্বিচারে ছাত্র-জনতাকে হত্যার অপরাধে দলটির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।

আজ রোববার শুনানি শেষে বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

মানবাধিকার সংস্থা সারদা সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া গত ১৯ আগস্ট জনস্বার্থে মামলা হিসেবে রিটটি করেন।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ তিন বছর করা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নামে নামকরণ হয়েছে এমন সব প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনে আদালতের আদেশও চাওয়া হয়েছিল রিটে।

এ ছাড়া, পাচার হওয়া ১১ লাখ কোটি টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বদলিরও দাবি জানানো হয় রিটে।

গত ২৭ আগস্ট রিট আবেদনের শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান হাইকোর্টকে রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার ইচ্ছা বর্তমান সরকারের নেই।

তিনি হাইকোর্টকে বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংবিধান অনুযায়ী সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, যারা বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সঙ্গে জড়িত থেকে অপকর্ম করেছে, তাদের বিচার আদালতের মাধ্যমে করা যেতে পারে। তবে, তাদের ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের জন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা ঠিক নয়।

আজ শুনানির সময় আসাদুজ্জামান হাইকোর্টকে বলেন, যিনি রিট পিটিশন দাখিল করেছেন, তিনি এ ধরনের পিটিশন দাখিল করতে পারেন না। কারণ, তার সংগঠনের গঠনতন্ত্র তাকে এই অনুমতি দেয় না।

তিনি আদালতকে বলেন, 'আওয়ামী লীগে অনেক ভালো নেতাকর্মী আছেন, যারা তাদের আদর্শে বিশ্বাসী।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা দেখেছি যে অতীতে অনেক রাজনৈতিক ইস্যু আদালতে আনা হয়েছে এবং এর জন্য আমাদেরকে মূল্য দিতে হয়েছে। সম্প্রতি গণঅভ্যুত্থান বিচার বিভাগেও পৌঁছেছে। আদালতের কিছু হলে একজন আইনজীবী হিসেবে আমার হৃদয়েও রক্তক্ষরণ হয়। তাই বলব, রাজনীতি থাকা উচিৎ রাজনীতির মাঠেই।'

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, 'আমরা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা দেখেছি, যেটা আমরা কেউই চাইনি। অতীতের স্বৈরাচারী শাসনামলে বিচার বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতা ও অবিচারের প্রেক্ষাপটে এমন ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।'

রিট আবেদনকারী পিটিশনে আওয়ামী লীগকে কোনো পক্ষ করেননি এবং আবেদন করার আগে এই রাজনৈতিক দলকে কোনো নোটিশও দেননি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তাই রিট আবেদনটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে তিনি যুক্তি দেন।

আবেদনকারী আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া নিজেই আবেদনটি করেছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

2h ago