সাভার-আশুলিয়া-ধামরাইয়ে ৮ হত্যা মামলায় আসামি শেখ হাসিনাসহ কয়েকজন মন্ত্রী

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

ঢাকার অদূরে সাভার উপজেলার সাভার মডেল থানা, আশুলিয়া থানা ও ধামরাই থানায় গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৮ জন নিহতের ঘটনায় পৃথক ৮টি মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিভিন্ন সময় মামলাগুলো থানায় নথিভুক্ত হয়েছে।

সাভার মডেল থানায় ২ মামলা

সাভার মডেল থানায় ঢাকা কমার্স কলেজ একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আবুল আহাদ সৈকত (১৭) নিহতের ঘটনায় ১২৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে তার বাবা নজরুল ইসলাম। মামলাটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। সাভার মডেল থানায় মালয়েশিয়া প্রবাসী শ্রাবণ গাজী (২০) নিহতের ঘটনায় ৮৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে তার বাবা মান্নান গাজী। মামলা দুটিতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

আশুলিয়া থানায় ৫ মামলা

আশুলিয়া থানায় মাংস বিক্রেতা মো. লেবু (৪০) নিহতের ঘটনায় তার স্ত্রী সেলিনা বেগম ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেছেন।

মাওলানা সাদিকুর রহমান নিহতের ঘটনায় তার স্ত্রী শাহিদা আক্তার মামলা ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। এ মামলায় ৪০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

তানজিল আহমেদ সুজয় নিহতরে ঘটনায় তার মামা মাজেদুল হক ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। এ মামলায়ও ৪০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরাফাত মুন্সি নিহতের ঘটনায় তার বাবা স্বপন মুন্সি ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। এ মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৩০০ জনকে। বিএনপি কর্মী মামুন খন্দকার নিহতের ঘটনায় তার স্ত্রী সাথী খন্দকার ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন।

এই পাঁচ জনই আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। মামলাগুলোতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

ধামরাই থানায় ১ মামলা

ধামরাই থানায় সাভার ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম সাদের (১৮) নিহতের ঘটনায় ৮২ জনের নাম উল্লেখ করে পৃথক একটি হত্যা মামলা করেছেন নিহতের নানা মো. আজীম উদ্দিন (৬৭)।

ধামরাই থানায় মো. আজীম উদ্দিনের দায়ের করা মামলায়, ঢাকা-২০ আসনের (ধামরাই) সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য বেনজির আহমদ (৭২), সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মালেক (৬৮), ধামরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম কবীর মোল্লা (৫৮), সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাদ্দেস হোসেন (৫৫), সাবেক সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আহম্মদ আল জামান (৬০),  মো. এনামুল হক আইয়ুব (৫৮), বাইশাকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান (৫৭), বালিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আহম্মদ হোসেন (৬৮), ধামরাই উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ (৬০), সানোড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খালেদ মাসুদ খান লাল্টু (৫৫), মো. আরিফ হোসেন (৩৭), ধামরাই পৌরসভার সাবেক কমিশনার তবারক হোসেন কামাল (৪২), সাবেক কমিশনার সাহেব আলী (৬২), মো. শিপলু (৩০), মাসুম খান (৬৯), সাখাওয়াত হোসেন সাকু (৬৫), হিমায়েত কবীর মতিন (৫৮), শহিদুল্লাহ (৫৮), আবু সাইদ (৬২), আমিনুর রহমান (৪৮), সিরাজুল ইসলাম (২৯), গাংগুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লা (৫০), আমজাদ মোল্লা (৫০), সুমন আলী (৩৮), দীপুসহ (৩৫) নামীয় ৮২ জনকে আসামী করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত ৮০-৯০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ধামরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোমেনুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ধামরাই হার্ডিঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে আন্দোলন করছিল ৫০০-৭০০ শিক্ষার্থী। এ সময় মামলায় উল্লেখিত ১ থেকে ২০ নম্বর আসামিদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় ও যাকে পায় তাকেই মারপিট ও গুলিবর্ষণ করতে থাকে। সেখান থেকে পালানোর সময় সাদের মাথায় গুলিবিদ্ধ হলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সাভারের বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৮ আগস্ট তার মৃত্যু হয়।

Comments

The Daily Star  | English
UN fact-finding report on July uprising

Awami League govt guilty of gross human rights violations: UN

Coordinated, calculated acts of violence, repression tantamount to crimes against humanity

3h ago