এস আলম গ্রুপের বিদেশে সম্পদ: হাইকোর্টের রুল খারিজ, দুদক তদন্ত করতে পারে
বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তোলার ঘটনায় এস আলম গ্রুপের মালিকের বিরুদ্ধে বিবাদীদের 'নিষ্ক্রিয়তা এবং ব্যর্থতা' প্রশ্নে হাইকোর্টের জারি করা সুওমোটো (স্বতপ্রণোদিত) রুল বাতিল করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
তবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারবে বলে জানিয়েছে আপিল বিভাগ।
এস আলম গ্রুপের মালিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়ে তোলার অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে হাইকোর্টের আদেশ ও রুল চ্যালেঞ্জ করে লিভ টু আপিল শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, রায়ের পূর্ণাঙ্গ বিবরণে বিস্তারিত উল্লেখ করা হবে, যা এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
বেঞ্চের অন্য পাঁচ বিচারপতি হলেন- বিচারপতি বোরহানউদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম।
গত বছরের ৬ আগস্ট হাইকোর্ট সুওমোটো রুল জারি করে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্ত পরিচালনা করে দুই মাসের মধ্যে হাইকোর্টে তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সেইসঙ্গে এস আলম গ্রুপের মালিকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযুক্ত কর্মকাণ্ড ঠেকাতে তাদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
গত ৪ আগস্ট দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ ও রুল জারি করেন।
'প্রশ্নবিদ্ধ অর্থ' বাংলাদেশ থেকে বিদেশে নিয়ে যেতে এস আলম গ্রুপকে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমতি দিয়েছে কি না, তা জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বিএফআইইউ প্রধানের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে এনে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চাওয়ার পর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ জারি করেন।
দ্য ডেইলি স্টারের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন অনুসারে, এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন, যদিও তিনি বিদেশে বিনিয়োগ বা তহবিল স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো অনুমতি নিয়েছেন এমন রেকর্ড নেই।
বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সে সময় ১৭টি কোম্পানিকে দেশের বাইরে বিনিয়োগের অনুমতি দিয়েছিল এতে এস আলম গ্রুপের নাম নেই।
আজ শুনানির সময় আবেদনকারীদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ, আজমালুল হোসেন, আহসানুল করিম এবং দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবং নিজের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সায়েদুল হক সুমন।
Comments