নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ না লেখায় চিকিৎসকের ওপর হামলা, অভিযুক্ত আ. লীগ নেতা গ্রেপ্তার

মাংকি টুপি দিয়ে মুখ ঢাকা জুলহাস ও শহীদুলকে ডামুড্যা থানা থেকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ প্রেসক্রাইব না করায় শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতা, ছাত্রলীগ নেতা ও ওষুধ কোম্পানির কর্মীর বিরুদ্ধে। 

ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমারত হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার ডামুড্যা থানায় মামলা করা হলে পুলিশ অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জুলহাস মাদবর ও তার ভাগ্নে ওষুধ কোম্পানির মেডিক্যাল প্রোমোশন অফিসার শহীদুল ইসলাম মৃধাকে গ্রেপ্তার করেছে।

অপর অভিযুক্ত গ্রেপ্তার জুলহাসের ছেলে ডামুড্যা কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি লিখন মাদবর পলাতক আছেন।

গত বুধবার রাতে তারা ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকায় সহকারী সার্জন নুসরাত তারিন তন্বীর ওপর হামলা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় চিকিৎসকের স্বামী মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বাদী হয়ে ওই ৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। 

মামলার বরাত দিয়ে ওসি বলেন, কয়েকদিন আগে একটি কোম্পানির মেডিক্যাল প্রোমোশন অফিসার শহিদুল ইসলাম মৃধা প্রেসক্রিপশনে তার কোম্পানির ওষুধ লেখার অনুরোধ জানান ডা. নুসরাত তারিন তন্বীকে। তিনি এতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। 

বুধবার রাতে ডামুড্যা বাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে বাসার কাছাকাছি এলাকায় ডা. নুসরাত হামলার শিকার হন। 

ওসি বলেন, 'হামলার সময় ডা. নুসরাতের চিৎকারে তার মা ও চিকিৎসক স্বামী মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া এগিয়ে এলে, তারাও হামলার শিকার হন। পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় ডা. নুসরাত ও তার মা মাসুমা খাতুনকে উদ্ধার করে ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।'

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় জুলহাস ও শহিদুলকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত লিখনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

ডা. নুসরাতের স্বামী মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, 'তারা চাচ্ছিল কিছু মানহীন ওষুধ প্রেসক্রিপশনে লিখতে। কিন্তু এটার সুযোগ নেই। আমার স্ত্রীও তাদের কথায় রাজি হয়নি। ওরা প্রভাবশালী হওয়ায় আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।'

জানতে চাইলে ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শেখ মোহাম্মদ মোস্তফা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি শহীদুল ও স্থানীয় কয়েকজন চিকিৎসক নুসরাতের ওপর হামলা চালিয়েছে। তিনি ও তার মা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।' 

তিনি বলেন, 'শুনেছি কোম্পানির পছন্দমতো ওষুধ না প্রেসক্রাইব করার কারণে এ হামলা হয়েছে। একজন ডাক্তার কখনোই চান না, তিনি রোগীকে ভুল বা অতিরিক্ত ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন।'

যোগাযোগ করা হলে শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুনেছি ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জুলহাস মাদবর এক চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। এটা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে দলীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Nowfel gained from illegal tobacco trade

Former education minister Mohibul Hassan Chowdhury Nowfel received at least Tk 3 crore from a tobacco company, known for years for illegal cigarette production and marketing including some counterfeit foreign brands. 

2h ago