সুদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় স্ত্রীকে নির্যাতন-স্বামীর আত্মহত্যা, গ্রেপ্তার ১
বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এক দিনমজুরের স্ত্রীকে বাঁশের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক সুদ কারবারির বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় অপমানিত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন সেই নারীর স্বামী আব্দুল মালেক।
গতকাল রোববার ভোরে গাবতলী উপজেলার পার রানিরপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে মালেকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে সুদের কারবারি মো. গোলজারকে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ৬ মাস আগে অভাবের কারণে আব্দুল মালেকের (৩৫) স্ত্রী রিমা বেগম (৩০) পাশের গ্রাম চকবেড়ার (দক্ষিণ পাড়া) সুদের ব্যবসায়ী মো. গোলজারের (৪০) কাছে ১ ভরি সোনা বন্ধক রেখে ৩৬ হাজার টাকা ঋণ নেন। এই টাকা শোধ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসে সুদের হার ৭ হাজার টাকা দেওয়ার চুক্তি হয়েছিল তাদের মধ্যে। সংসারে অভাবের কারণে সুদের টাকা পরিশোধ না করতে পারেনি তারা। গোলজারের দাবি, তিনি এখন ৭৫ হাজার টাকা পান।
গত বৃহস্পতিবার গোলজার ও তার লোকজন সন্ধ্যা ৭টায় বাড়ির পাশ থেকে রিমাকে তুলে নিয়ে তার বাড়ির বাঁশ ঝাড়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে রিমার স্বামীকে খবর দেয়। রিমার বাবা এই খবর পেয়ে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে রাতে (আনুমানিক ২টায়) মেয়েকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে নিয়ে যায়।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, অপমান সহ্য করতে না পেরে আব্দুল মালেক গত শনিবার রাতে নিজ ঘরে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
জানতে চাইলে গাঁৱলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চক্রবর্তী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রোববার সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। মালেকের স্ত্রী রিমা বাদী হয়ে আজ দুপুরে মালেকসহ ৩-৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে (আত্মহত্যার প্ররোচনার) মামলা করেন। পুলিশ সুদের ব্যবসায়ী গোলজারকে তার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।'
'আমরা তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আবেদন করব,' বলেন ওসি।
ওসি বলেন, 'এলাকায় খোঁজ নিয়ে জেনেছি গোলজার সুদের ব্যবসা করে এবং তার কারণে এলাকার অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেক তার ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে তার বিরুদ্ধে এর আগে কেউ মামলা করেনি।'
Comments