৬ মাসের সন্তানসহ দম্পতিকে ‘তুলে নেওয়ার’ ১ মাস পর গ্রেপ্তার দেখানোর অভিযোগ 

মাদ্রাসার একজন শিক্ষক, তার স্ত্রী এবং তাদের শিশুসন্তানকে 'তুলে নেওয়ার' এক মাস পর মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকার একটি আদালতে হাজির করার অভিযোগ উঠেছে।  

ইকরামুল হক মিলন (২৮), তার স্ত্রী দেওয়ান ফারিয়া আফরিন আনিকা (২১) এবং তাদের ছয় মাস বয়সী ছেলেকে গত ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ময়মনসিংহ থেকে তুলে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে গত ১ মে ইকরামুলের ভাই ইমদাদুল হক ইমনের অভিযোগে এসব তথ্য জানা যায়।

অভিযোগে বলা হয়েছে, শিশুসন্তানকে নিয়ে মিলন ও আনিকা তাদের বড়চরের বাড়ি থেকে সানকিপাড়ার দিকে রিকশায় করে যাওয়ার সময় নয়নমনি বাজারের সামনে একটি টয়োটা হাইয়েস গাড়ি তাদের বাধা দেয়।

অভিযোগে বলা হয়েছে, গাড়ির গায়ে পুলিশের স্টিকার লাগানো ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীদের জানিয়েছেন যে, সাদা পোশাকে দুই পুরুষ ও এক নারী ওই তিন জনকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। তখন থেকেই ওই দম্পতির মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির ডায়াপার ব্যাগসহ তাদের অন্যান্য ব্যাগগুলো পাওয়া গেলেও, ইকরামুলের সঙ্গে থাকা ল্যাপটপটি পাওয়া যায়নি বলে জানান ইমদাদুল।

ইকরামুল সূত্রাপুরের ফরিদাবাদ মাদ্রাসার শিক্ষক।

তার পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, তারা থানায় সাধারণ ডায়েরি করার চেষ্টা করলেও থানা সেটি নেয়নি।

নিখোঁজ তিন জনের সন্ধান পেতে পরিবারটি যখন সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করছিল, তখন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের সদস্য হওয়ার অভিযোগে ঢাকার সবুজবাগ থানার এক মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর একদিন পর গত ৩১ মে আদালতে এই তিন জনকে হাজির করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ওইদিন অভিযান চালিয়ে ওই দম্পতিকে রাজধানীর সবুজবাগের একটি খেলার মাঠ থেকে আটক করা হয়েছে।

ইকরামুলকে তিন দিনের রিমান্ডে এবং আনিকা ও শিশুসন্তানকে কারাগারে পাঠানো হয়।

পরিবারের সদস্যরা এই প্রতিবেদককে জানান, শিশুটির খাওয়ার বোতল ভেঙে যাওয়ার পর আনিকাকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়েছিল, তখনই তারা ওই তিন জনের অবস্থান সম্পর্কে জানাতে পারেন।

পরে ইকরামুলের বাবা শিশুটির হেফাজত চেয়ে আদালতে আবেদন করলে আদালত তাকে অনুমতি দেন। গত ৮ মে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে শিশুটিকে বাড়িতে আনা হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের উপ-কমিশনার এস এম নাজমুল হক জোরপূর্বক গুমের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৩০ মে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সবুজবাগের আব্দুল আজিজ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের রাস্তায় আনসার-আল-ইসলামের 'গোপন নিয়োগ সভা' করছিলেন ইকরামুল ও আনিকা।

খবর পেয়ে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে। বাকিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

পুলিশের দাবি, ইকরামুল জঙ্গি সংগঠনের একজন রিক্রুটার ছিলেন এবং তার স্ত্রী তাকে সাহায্য করতেন। 

তবে মামলার বিবরণীতে আনিকার সঙ্গে যে তার শিশুসন্তান ছিল সে বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

14h ago