লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে শিশু নিহতের ঘটনায় মামলা, আ. লীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৫
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় খাসজমি দখল এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে এক শিশু নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার নিহত শিশু রাসেল হোসেনের (১২) মা ফাতেমা বেগম রায়পুর মডেল থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ২-৩ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ এটিকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে মো. রাকিবকে (৩৩)। দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা বি এম শাহজালাল রাহুলকে। ১ নম্বর আসামি রাকিব নেতা রাহুলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
মামলায় গতকাল বুধবার দুপুরে আটক রাহুলসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রায়পুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রায়পুর উপজেলার ৮ নম্বর চরবংশী ইউনিয়নের মেঘনা নদীতে জেগে উঠা খাস জমির চর, স্থানীয় খেয়া পারাপারের স্থান রাহুল ঘাটের ইজারা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল রাহুল ও ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
এই বিরোধকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার সকালে ২ গ্রুপের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শিশু রাসেল হোসেন গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রাসেল মিয়ারহাট এলাকার মনির হোসেন ভুট্টুর ছেলে।
এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রাহুলসহ ৫ জনকে আটক করে।
সন্ধ্যায় দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের মিয়ারহাট বাজারে রাহুলের আস্তানা থেকে ৩টি ধারালো ছুরি, ১টি রামদা, একটি চাপাতি ও ৩টি খেলনা পিস্তল উদ্ধা করা হয়।
রাহুল উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন সদর উপজেলার পূর্ব নন্দনপুর গ্রামের মো. সোহাগ (২৭), চরলক্ষ্মী গ্রামের ফারুক কারী ও চরকাছিয়া গ্রামের সুমন শিকদার (৩০)। তারা সবাই রাহুলের অনুসারী।
মামলার এজাহারে নিহতের মা ফাতেমা বেগম উল্লেখ করেন, তার স্বামী মনির চরের জমিতে ফসল ফলান। সেই জমির ফসল জোর করে কেটে নেন আওয়ামী লীগ নেতা রাহুল। এ ব্যাপারে তার স্বামী প্রতিবাদ করলে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। বুধবার সকালে নিহত রাসেল ও তার বাবা ওই জমি দেখাশোনা করতে ঘর থেকে বের হয়। পথে খেয়াঘাট এলাকায় পৌঁছালে রাহুল তার লোকজন নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে রাসেল ও তার বাবা মনির হোসেনের ওপর হামলা করে।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, 'মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।'
Comments