মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ আসামি ছিনতাইয়ের পর যা বললেন দীপনের বাবা ও স্ত্রী

দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ২ আসামি মাইনুল হাসান শামীম এবং আবু সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ আনসার আল ইসলাম সদস্য ঢাকার একটি আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পালিয়ে যাওয়ায় বিস্মিত ও আতঙ্কিত তার পরিবারের সদস্যরা।

আজ রোববার যোগাযোগ করা হলে টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে আরেফিন দীপনের স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান জলি বলেন, 'আমি শকড। কোনোভাবেই হিসাব মেলাতে পারছি না যে এ ধরনের ঘটনা কীভাবে সম্ভব। এটা খুবই ভয়ের ব্যাপার।'

তিনি আরও বলেন, 'এটা শুধু আমার জন্য ভয়ের জায়গা না, এটা পুরো দেশের জন্যেই একটা ভীতিকর ঘটনা। এই জঙ্গিরা যে শুধু আমাকেই মারতে পারে তা নয়। আপনাকেও মারতে পারে, যে কাউকে মারতে পারে।'

দীপনের বাবা লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটা বিস্ময়কর। বিষয়টি আতঙ্কের। তাদের গ্রেপ্তারে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে বলে খবর দেখলাম। দেখা যাক কী হয়।'

উল্লেখ্য, আজ ঢাকার একটি আদালত থেকে দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে আবু সিদ্দিক ওরফে সোহেল ওরফে সাকিব, এবং মাইনুল হাসান শামীমকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তার সহযোগীরা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপকমিশনার ফারুক হোসন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমি যতটুকু শুনেছি, ২ আসামি আদালতে হাজিরা দেয়। আদালত থেকে বের হওয়ায় সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের চোখে জঙ্গিরা এক ধরনের স্প্রে করে। পুলিশ সদস্যরা চোখ কচলে যখন তাকায় তখন দেখতে পায় আসামিরা মোটরসাইকেলে পালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ট্রাফিক বিভাগ, গোয়েন্দা শাখা, মহানগরের প্রতিটি থানাকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে ঢাকার ১৬টি প্রবেশ ও বহির্গমন পথে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবদুল্লাহ আবু বলেন, 'সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে হাজিরা শেষে আদালত থেকে নামিয়ে গারদখানায় নেওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।'

তিনি আরও বলেন, 'আসামিরা হত্যা মামলার আসামি, তারা জঙ্গি। বাইরে থেকে দুটি মোটরসাইকেলে ৪ জন লোক আসে। একটি বাইক তারা ফেলে গেছে, আরেকটি বাইক নিয়ে তারা পালিয়েছে। দুজনকে তারা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। পুলিশের চোখে স্প্রে করেছে, পুলিশ আহত হয়েছে। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী আছে। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা যে জঙ্গি সংগঠনের সদস্য সেটা স্পষ্ট বোঝা যায়।'

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, 'ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে আমরা রেড অ্যালার্ট জারি করেছি। আমাদের পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছে তাদের। শিগগির তাদের ধরতে পারবো বলে আমরা বিশ্বাস করি।'

তিনি বলেন, 'আমরা বর্ডার এলাকাগুলোতেও বলে দিয়েছি। তারা যেন আমাদের দেশ থেকে পালিয়ে যেতে না পারে। এই ঘটনাটি দুঃখজনক। যদি কারো অবহেলা থাকে, গাফিলতি থাকে, যদি কেউ ইচ্ছা করে এই কাজটি করে থাকেন তার উপযুক্ত ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো। নিশ্চয়ই আমরা তদন্ত কমিটি করবো, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।'

তিনি আরও বলেন, 'কী স্প্রে দিয়েছে, কারা দিয়েছে সবগুলো বিষয় বলতে আমাদের আরেকটু সময় লাগবে। তদন্ত করে আমরা বলবো।'

এই ২ আসামিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ১০ লাখ টাকা করে ২০ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।

Comments

The Daily Star  | English

20 non-banks on BB red list

As of December last year, they disbursed Tk 25,808 crore in loans against collateral worth Tk 6,899 crore, according to the BB report

10h ago