জামালপুরে আধিপত্য নিয়ে আ. লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ-গুলি, গ্রেপ্তার ২

ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় যমুনা সার কারখানায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের ২ গ্রুপে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির অভিযোগ উঠেছে। এতে পুলিশসহ উভয়পক্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১৩ জন।

এ ঘটনায় ১২০ জনের নামে ও অজ্ঞাতনামা ১০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

মামলায় সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সানোয়ার হোসেন বাদশার ছোট ভাই ময়নাল ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী জামালকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

একই ঘটনায় সাবেক ইউপি সদস্যের বাড়িতে হামলা ও লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত যমুনা সার কারখানা এলাকায় এই সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে।

এ সময় পুলিশ ৩ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আজ ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকলেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক ও স্থানীয়রা জানান, যমুনা সার কারখানায় আধিপত্য বিস্তার ও আমদানিকৃত সার পরিবহনে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল।

গতকাল রাত ৯টার দিকে রফিকুল ইসলাম সমর্থিত রায়হান কান্দারপাড়া বাজারে হামলার শিকার হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রফিকুল ইসলামের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে কারখানার গেটপাড় এলাকায় এলে তাদের সঙ্গে আশরাফুল আলম মানিক গ্রুপের সংঘর্ষ হয়।

এ সময় উভয়পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে মিনহাজ, রায়হান, রফিক, মজিদ, রশিদ, লালন, লাল চানসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। গুরুতর আহত মিনহাজ ও রফিককে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক বলেন, 'রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করা হয়েছে।'

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, 'সরকার কাফকো থেকে যমুনা সার কারখানায় গ্রামসিকো লিমিটেডের মাধ্যমে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানি করছে। সারগুলো আনলোডের জন্য মেসার্স মাজেদা ট্রেডার্স দায়িত্ব পায়। আশরাফুল আলম মানিক প্রতি ট্রাক থেকে ৫০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন। প্রতিবাদ করায় মানিকের লোকজন সম্প্রতি চড়াও হয়।'

এর জেরে গতকাল উভয়পক্ষের সংঘর্ষের সূত্রপাত বলে তিনি জানান। তবে গুলিবর্ষণের কথা তিনি অস্বীকার করেন।

সাবেক ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, 'আওয়ামী লীগের ২ গ্রুপে সংঘর্ষের জেরে রাত ১১টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয় ক্যাডার মুর্শেদের নির্দেশে আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে নগদ টাকা ও মূল্যবান মালামাল লুট করেছে।'

স্থানীয় বুশরা বাণিজ্যিক সংস্থার ম্যানেজার মো. শাহ আলম জানান, সংঘর্ষের সময় তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়েছে। ভাঙচুরে তিনি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, 'যমুনা সার কারখানা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন ২ পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।'

Comments

The Daily Star  | English

BNP not in favour of banning any political party: Fakhrul

'Who are we to ban a political party? The people will decide,' says the BNP leader

47m ago