এবার উপজেলা চেয়ারম্যানের দিকে পিস্তল তাক করলেন এমপি বাবলু

চেয়ারম্যানের নির্দেশে যুবলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ এমপি বাবলুর
পিস্তল হাতে এমপি রেজাউল করিম বাবলু। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় শাহজাহানপুর উপজেলার একটি মিটিংয়ে গিয়ে যুবলীগ নেতা-কর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বগুড়া-৭ আসনের (গাবতলী-শাহজাহানপুর) সংসদ সদস্য (এমপি) রেজাউল করিম বাবলু। এ ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গেলে শাহজাহানপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন সান্নুর দিকে এমপি বাবলু পিস্তল তাক করেছেন বলে সান্নু অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এমপি রেজাউল করিম বাবলু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজকে উপজেলার মাসিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার মিটিংয়ে যোগ দেওয়ার জন্য আমাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চিঠি দিয়েছিল। সেজন্য আমি সকালে উপজেলা ভবনে যাই। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান সান্নুর নির্দেশে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা সকাল সাড়ে ১০ টায় আমার ওপর হামলা করে।'

'সান্নুর নির্দেশেই ৪ থেকে ৫ জন যুবলীগ নেতা-কর্মী আমার ও আমার সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর হামলা করে। লোহার রড দিয়ে আমার পিএস রেজাউল করিম রেজার মাথা ফাটিয়ে দেয় হামলাকারীরা। রেজাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে', বলেন তিনি।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন সান্নু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উপজেলা যুবলীগের নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে প্রকল্পের জন্য টাকা নিয়েছিলেন এমপি। এমপি তাদের প্রকল্পে কাজ দেননি, টাকাও ফেরত দেননি। এ নিয়ে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাদশার সঙ্গে আজ সকালে এমপির গণ্ডগোল হয়। সেসময় আমি বিষয়টি মীমাংসা করতে আসলে এমপি বাবলু আমার দিকে পিস্তল তাক করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।'

উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলমগীরের ডেইলি স্টারকে বলেন, 'টিআর ও কাবিখা প্রকল্প পাওয়ার জন্য ৪ বছর আগে আমি এমপি বাবলুকে ৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা দেই। কিন্তু, তিনি আমাকে প্রকল্প দেননি। ৪ বছর হলো তিনি উপজেলায় আসেন না। ৩ লাখ টাকা ফেরত দিলেও আমি এখনো তার কাছে ৯৫ হাজার টাকা পাই। আজ তিনি উপজেলা পরিষদ ভবনে আসলে আমি তার কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং আমাকে লোহার রড দিয়ে আক্রমণ করেন।'

এমপির পিএসের মাথা ফাটানোর অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা কে করেছে জানি না। আমি করিনি।'

প্রকল্পের জন্য টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে জেলে এমপি রেজাউল করিম বলেন, 'এ টাকার বিষয়ে তিনি আগে কেন কোনো অভিযোগ দেননি? আজ মারামারির পরে কেন দিচ্ছে? এর সঙ্গে টাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তারা আমার ওপর হামলা করবে, এটা পরিকল্পিত ছিল।'

উপজেলা চেয়ারম্যানের দিকে পিস্তল তাক করার বিষয়ে জানতে চাইলে এমপি বাবলু বলেন, 'তারা হামলা করে আমার পিএসের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। এরপরে আমাকে আক্রমণ করতে আসলে আত্মরক্ষার জন্য আমি পিস্তল বের করি। আত্মরক্ষার জন্যই তো সরকার আমাকে এই পিস্তলের লাইসেন্স দিয়েছে।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মানুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সবাই এখন উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির মিটিংয়ে আছি। এমপির সঙ্গে কী হয়েছে, কেন হয়েছে, এই মিটিংয়ের পরে সেটা বলতে পারব।'

এর আগে, এমপি বাবলুর বিরুদ্ধে পিস্তল কিনে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করার অভিযোগ উঠেছে। ওই ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বগুড়ায় সর্বস্তরে তখন এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

Comments

The Daily Star  | English

For the poor, inflation means a daily struggle

As inflation greets Bangladeshis at breakfast time, even the humble paratha becomes a symbol of struggle. Once hearty and filling, it now arrives thinner and lighter -- a daily reminder of the unending calculations between hunger and affordability.

8h ago