এক আনা ৩ রতির স্বর্ণের দুলের জন্য স্কুল শিক্ষার্থীকে গলা টিপে হত্যা

নরসিংদীর শিবপুরে নিখোঁজের ৬ ঘণ্টা পর প্রতিবেশীর বাড়ির আলমারির ভেতর থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় ৮ বছরের শিশু সায়মার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
স্কুল শিক্ষার্থী সায়মা। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর শিবপুরে নিখোঁজের ৬ ঘণ্টা পর প্রতিবেশীর বাড়ির আলমারির ভেতর থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় ৮ বছরের শিশু সায়মার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত ওই প্রতিবেশী দম্পতিকে আসামি করে শিবপুর থানায় মামলাটি করেন সায়মার বাবা সারোয়ার জাহান।

আসামি দম্পতি হলেন, সেলিনা বেগম ওরফে শেলী (২৮) ও মো. হানিফা (৪৫) । তারা শিবপুরের যোশর ইউনিয়নের যোশর বাজারের মুন্সিবাড়ি এলাকার রেহেনা বেগমের বাড়িতে ২ বছর ধরে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করেন। মামলা হওয়ার পর গতকাল সন্ধ্যায়ই তাদের ২ জনকে নরসিংদীর আদালতে তোলা হলে সেলিনা বেগম ওরফে শেলী হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুর একটার দিকে নিজ বাড়ির আঙিনায় খেলা করার সময় নিখোঁজ হয় সায়মা জাহান। নিখোঁজের ৬ ঘণ্টা পর ওই প্রতিবেশীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাদের আলমারি থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সায়মা জাহান শিবপুরের যোশর ইউনিয়নের যোশর বাজার মুন্সীবাড়ি এলাকার সারোয়ার জাহানের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক হানিফা বাড়িতে ফিরে জানতে পারেন, তার স্ত্রী কানের দুলের জন্য সায়মাকে হত্যা করে মরদেহ বস্তাবন্দী অবস্থায় আলমারির ভেতরে রেখে দিয়েছে। ঘটনা জানার পর হানিফা সত্য আড়াল করতে ঘটনাকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা ছিল স্বামী-স্ত্রী মিলে রাতের অন্ধকারে সায়মার মরদেহ অন্য কোন জায়গায় ফেলে দেবে। কিন্তু রাত হওয়ার আগেই সন্ধ্যার দিকে পুলিশ তাদের ঘর তল্লাশি করে সায়মার মরদেহ উদ্ধার করে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শেলী নিজেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানান।

শেলীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সায়মার ২ কানে এক আনা ৩ রতি ওজনের ২টি স্বর্ণের দুল ছিল যা নেওয়াই তার মূল উদ্দেশ্য ছিল। নানা কৌশলে শেলী দুল ২টি নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে জোর করতে থাকলে মা-বাবাকে বলে দেওয়ার কথা বলে সায়মা। এরপরও দুল কেড়ে নিতে চাইলে কান্না করতে থাকে সে। একপর্যায়ে তাকে গলা টিপে হত্যা করেন শেলী। পরে তার মরদেহ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে রান্নাঘরের আলমারিতে রেখে দেন। রাতের কোনো এক সময় মরদেহটি বাইরে কোথাও ফেলে আসার পরিকল্পনা ছিল তার।

সেলিনা বেগম ওরফে শেলীর স্বীকারোক্তিমতে তার ঘর হতে সায়মার কানের দুল উদ্ধার করা হয়।

নিহত সায়মার বাবা সারোয়ার জাহান বলেন, মাত্র এক আনা ৩ রতি ওজনের একজোড়া সোনার দুলের লোভে আমার মেয়েকে তারা এভাবে হত্যা করল। আমার একটাই চাওয়া, দ্রুততম সময়ে বিচারকাজ করে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হোক।

শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, মামলা হওয়ার পরপরই তাদের ২ জনকে নরসিংদীর আদালতে পাঠানো হয়। শিশুটির কানে থাকা একজোড়া সোনার দুলের লোভে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন সেলিনা বেগম ওরফে শেলী। আদালত তাদের ২ জনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Gonoforum holding dialogue with Yunus

The team led by Gonoforum emeritus President Dr Kamal Hossain entered Jamuna around 3:00pm

1h ago