দুই বাসের প্রতিযোগিতায় চাপা পড়ল দুই বোন, একজনের মৃত্যু
অন্যান্য দিনের মতোই আজ বুধবারও দুই বোন তাসনিম জাহান আইরিন ও নুসরাত জাহান জেরিন মিরপুর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে উত্তর বাড্ডায় তাদের অফিস নেক্সট ভেঞ্চারের দিকে যাচ্ছিলেন।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে তারা সেখানে পৌঁছান এবং অটোরিকশা থেকে নেমে ব্যস্ত সড়ক প্রগতি সরণি পার হচ্ছিলেন। ওই মুহূর্তেই আকাশ পরিবহনের দুটি বাস যাত্রী ওঠানোর জন্য একে অপরকে ওভারটেক করতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি বাস সজোরে অন্যটিকে ধাক্কা মেরে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং সেই সময় ওই দুই বোনকে চাপা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান নেক্সট ভেঞ্চারের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ আইরিন। অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও পায়ে আঘাত পান জেরিন। তৎক্ষণাৎ তাকে নিকটবর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আইরিনের ভাবী সায়মা সুলতানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আইরিন ও জেরিন একসঙ্গেই থাকতেন এবং একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন... কিন্তু বেপরোয়া বাসচালকের কারণে নিমিষেই একজনের প্রাণ ঝরে পড়ল।'
পরিবারের সদস্যরা জানান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আইরিন প্রথমে একটি আইটি ফার্মে যোগ দেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তার বড় বোনও একই প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন।
আকাশ পরিবহনের একটি বাসে থাকা যাত্রী আনিকা তাবাসসুম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বেশ কিছুক্ষণ ধরে বাস দুটি পাল্লা দিচ্ছিল। ঢাকা মেট্রো-ব ১৩০১৮৯ রেজিস্ট্রেশন নম্বরের বাসটি আগের বাসটিকে অন্তত তিনবার ধাক্কা দেয় এবং দুই বোনকে চাপা দেয়।'
একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আনিকা আরও বলেন, 'বেপরোয়াভাবে বাস চালানোর কারণেই ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। আইরিন বাসের চাকার নিচে আটকা পড়েছিল। পাল্লা দেওয়ার সময় দুটি বাস একে অপরকে ধাক্কা দেওয়ায় তিনি ঘাড়ে আঘাত পান।'
ঘটনাস্থলের আশেপাশে কোনো ফুট ওভারব্রিজও ছিল না।
বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফাতেমা সিদ্দিকা জানান, দুটি বাস প্রতিযোগিতা করায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, বাস দুটি জব্দ করা হয়েছে।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার পরপরই চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। পরে বিকেলে মধ্যবাড্ডা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চালক মিলন হোসেন মিন্টুকে (৫০) আটক করে পুলিশ। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
Comments