শিশু হাসপাতাল: পুড়ে গেছে কার্ডিওলজি বিভাগের আইসিইউ-এইচডিইউ
আগুনে পুড়ে গেছে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগের আইসিইউ ও এইচডিইউ।
শুক্রবার দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটের দিকে হাসপাতালের ৯ তলা ভবনের ৫ তলায় কার্ডিওলজি বিভাগে এ আগুন লাগে এবং দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে আগুন নেভানো হয়।
আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ওই বিভাগের আইসিইউ ও এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন সব শিশুদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। অন্য বিভাগের আইসিইউতে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আইসিইউতে সেসময় পাঁচজন এবং এইচডিইউতে সাতজন রোগী ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে আগুনে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
কার্ডিওলজি বিভাগের এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন ছিল দুই মাস বয়সী সোলায়মান। তার মা মায়মুনা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি হঠাৎ এইচডিইউতে ধোঁয়া ঢুকতে দেখেন।
পরে সোলায়মানকে হাসপাতালের অন্য একটি ভবনের নিওন্যাটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিইউ) স্থানান্তর করা হয় এবং বর্তমানে তাকে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এনআইসিইউর চিকিৎসকরা জানান, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন থেকে পাঁচ শিশুকে এনআইসিইউতে আনা হয়েছে। তাদের সবার অবস্থা স্থিতিশীল।
সাত মাস বয়সী ছেলে ইয়াসিনকে নিয়ে হাসপাতালের পঞ্চম তলায় ছিলেন মা নার্জু বেগম। রিকভারি বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিল ইয়াসিন।
হঠাৎ প্রচণ্ড ধোঁয়া দেখে তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ইয়াসিনকে অবশ্য তাৎক্ষণিক অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়।
নার্জু বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগুন লাগার পর প্রচণ্ড ধোঁয়ায় ঘর ভরে যায়। ভয় পেয়ে ছেলেকে কোলে নিয়ে দৌড় দেই নিচের দিকে।'
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ওই ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এতে তীব্র গরমের কারণে বিভিন্ন তলা থেকে বেশ কয়েকজন রোগীকে নিয়ে অভিভাবকরা হাসপাতালের নিচের খোলা জায়গায় জড়ো হন এবং বিকেল ৪টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন।
দ্বিতীয় তলার স্টাফ নার্স স্মৃতি খাতুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সবাই পরে ওয়ার্ডে ফিরে এসেছেন। আমরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তাদের আবার ওয়ার্ডের বেডে দিয়েছি।'
সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালের ওই ভবনে বিদ্যুৎ ছিল না। সেসময় বিভিন্ন তলার ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা শিশুদের পাখা দিয়ে বাতাস করতে দেখা গেছে অভিভাবকদের।
হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম জানান, আগুনে সব যন্ত্রপাতি পুড়ে যাওয়ায় চতুর্থ তলার সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, 'তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সব রোগীকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।'
এসি থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
Comments